বিআরটি’র প্রকল্পে ৯ বছরে ১১ প্রাণহানি

২০১২ সালে উদ্বোধনের পর থেকে গত ৯ বছরে বিআরটি’র প্রকল্পে ১১ জনের প্রাণ ঝরেছে। আহত হয়েছেন ২৭৮ জন। ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকার বিআরটি প্রকল্পে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ৮২১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

অন্যদিকে ২০১৬ সালে শুরু হওয়া ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকার মেট্রোরেল প্রকল্পে প্রাণ গেছে ৩ জনের, আহত হয়েছেন ৮৬ জন। অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ২ হাজার ১৪০ কোটি ১২ লাখ টাকার।

রোববার (২১ আগস্ট) স্বেচ্ছাসেবী ও গবেষণাধর্মী সংগঠন সেভ দ্য রোড এর পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, বিআরটি প্রকল্পের সীমাহীন অব্যবস্থাপনা, ঠিকাদারদের দায়িত্বে অবহেলা আর প্রকল্প কর্তাদের অদক্ষতায় ২৯ হাজার ৫১২ কর্মঘণ্টা অপচয়ের পাশাপাশি সবচয়ে নির্মম হলেও সত্য যে, অ্যাম্বুলেন্সে থাকা মুমূর্ষু রোগীদের মধ্য থেকে হাসপাতালে যাওয়ার পথে যানজটে প্রাণ হারিয়েছেন ১২৬ জন। অসহনীয় দূষণের কারণে অসুস্থ হয়েছেন ৯ বছরে ৩ হাজার ৫৬২ জন। প্রায় একই অবস্থা ৭ বছর ধরে চলমান চরম বিদ্যুৎ সংকটের দেশে বিদ্যুৎ দ্বারা পরিচালনার পরিকল্পনায় নির্মিতব্য মেট্রোরেল প্রকল্পে। ১১ হাজার ৮৬০ কর্মঘণ্টা অপচয়ের সাথে সাথে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা ৫৪ রোগী দ্রুততম সময়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে না পারায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেছেন। ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের কারণে অসুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৫৬২ জন।

আকাশ, সড়ক, রেল ও নৌপথ দুর্ঘটনামুক্ত করার জন্য দেশের একমাত্র স্বেচ্ছাসেবী ও গবেষণাধর্মী সংগঠন সেভ দ্য রোড এর মহাসচিব শান্তা ফারজানা জানান, বিআরটি প্রকল্পটি ২০১২ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করলেও মূলত কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালে। যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে সুচারুরূপে চলতি বছরের মধ্যে কাজ শেষ না করা হয়, তবে আগামী বছর বিআরটি’র সাথে সাথে মেট্রোরেল প্রকল্পটি হবে ব্যস্ততম ঢাকায় মরার উপর খাঁড়ার ঘা।

সেভ দ্য রোড এর চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, প্রতিষ্ঠাতা মোমিন মেহেদী, মহাসচিব শান্তা ফারজানা, ভাইস চেয়ারম্যান বিকাশ রায়, জিয়াউর রহমান জিয়া, আইয়ুব রানা, শওকত হোসেন ও ঢাকা সাব এডিটরস কাউন্সিলের সহ-সভাপতি আনজুমান আরা শিল্পী উল্লেখ করেন, এই দুই প্রজেক্টের প্রতিটি পরিকল্পনাকারী এবং কর্তাদের উচিৎ হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের রূপরেখাকে সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়নের জন্য সতর্কতার সাথে দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা। যাতে করে উপকার হোক বা না হোক, অপকার যেন না হয়। আর যেন কোনো প্রাণ না যায় অযাচিত অব্যবস্থাপনায়।

একই সাথে সেভ দ্য রোড নেতৃবৃন্দ মেট্রোরেল ও বিআরটি প্রকল্প চলাকালীন সময়ে এয়ারপোর্ট, উত্তরা, রামপুরা, বাড্ডা, কাওরানবাজার, ফার্মগেট, মিরপুর, শাহবাগ, মহাখালী, গুলশান, বনানী, ধানমণ্ডি, শ্যামলী, গাবতলী, সাতরাস্তা মোড়, মগবাজার, গুলিস্তান, পুরান ঢাকা, নিউ মার্কেট, সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী এলাকায় বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক সতকর্তার জন্য নিয়োগের দাবি জানান। পাশাপাশি রাজধানীতে ৩ কিলোমিটার অন্তর ‘পুলিশ বুথ’ স্থাপনের মাধ্যমে ধর্ষণ-খুন-নৈরাজ্য-ছিনতাই প্রতিহত করা সম্ভব বলেও জানান তারা।