পাতা তোলার ভর মৌসুমে দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
মঙ্গলবার দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। পরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে মানববন্ধন শেষ হয়। এতে জোটের সমন্বয়ক ইফরাতুল হাসান রাহিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, দিক থিয়েটারের সভাপতি আব্দুল বাছিত সাদাফ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ এবং চা শ্রমিকের প্রতিনিধি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রুপালি পাল।
এ সময় বক্তারা বলেন, দৈনিক ২৪ কেজি চা পাতা তোলার সাপেক্ষে একজন শ্রমিককে ১২০টাকা দেয়া হয়। যা দিয়ে বর্তমান সময়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে তাদের পক্ষে। এ বেতনে মৌলিক চাহিদা মিটাতে পারছেন না শ্রমিকরা। ফলে তাদের বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে সরকারের সুনজর কামনা করেন বক্তরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রুপালি পালের বাবা একজন চা শ্রমিক। বাবার আয়ে চলে তাদের পরিবারের ভরণ-পোষণ। তিনি বলেন, চা বাগানের শ্রমিকদের দিন শুরু হয় চা পাতা খাওয়ার মাধ্যমে। সকালে কিংবা দুপুরে এখনো চা পাতার ভর্তা দিয়ে ভাত খায় তারা। ফলে পুষ্টিগুণাগুণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শ্রমিকরা। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির ফলে তাদের ভরণ-পোষণ তো দূরের কথা ভাত খেতেই বেগ পেতে হয় তাদেরকে। এ যেনো পিঠের ঝুড়ি পেটে গিয়ে ঠেকেছে।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ বলেন, দৈনিক ২৪ কেজি চা পাতা তোলার সাপেক্ষে একজন শ্রমিককে ১২০ টাকা দেওয়া হয়। প্রতিদিন এতো কেজি চা পাতা তোলা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। বৃদ্ধ কিংবা অসুস্থ ব্যক্তির পক্ষে ১২০ টাকা আয় করা কখনো সম্ভব না। এমতাবস্থায় ঐ ব্যক্তির পক্ষে তার পরিবারের সদস্যদের ভোরণ পোষণ দেওয়া কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে।
দিক থিয়েটারের সভাপতি আব্দুল বাছিত সাদাফ বলেন, চা শ্রমিকরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পরিশ্রমের তুলনায় ন্যায্য বেতন পাচ্ছেন না তারা। ফলে ভরণ-পোষণসহ সবকিছু নিয়ে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছেন তারা। বেতন ৩শ’টাকা করার দাবিতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছে তারা। অথচ সরকার এখনো চুপ রয়েছে। সরকারের সদিচ্ছার ফলে ন্যায্য বেতন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শ্রমিকরা। তাই শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।