প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে রড ব্যবহার না করে ঘর বানানোয় সেই ঘর ভেঙে ফেলেছে দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) রাতে অনিয়ম করে ঘর নির্মাণ হচ্ছে এমন খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) (এসিল্যান্ড) রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচটি ঘর ভেঙে ফেলেন। এ সময় আরও ছয়টি ঘরের কাজ বন্ধ রাখা হয়।
শনিবার (১৩ আগস্ট) ভোর রাত পর্যন্ত অনিয়ম করে বানানো নির্মাণাধীন ঘরগুলো ভাঙা হয়। ঘরের ভীমের মাথায় চার টুকরা রড ছাড়া আর কোনও রড দেয়া হয় নি।
ঘরের ভেতরে রডের ছিটেফুটোও নেই। এমন দুঃসাহসিক এবং অমানবিক অনিয়ম হয়েছে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে উপহারের ঘর নির্মাণে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের আজমপুর এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ৩৭টি গৃহ নির্মাণ কাজ এপ্রিল মাসে শুরু হয়। ঘরের কাজ করাচ্ছিলেন উপজেলা সদরের রায়নগরের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য ঠিকাদার তাজির উদ্দিন।
কাজের শুরুতেই নির্মাণ ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছিল। ১৬ জুনের বন্যার আগে কিছু ঘরের কাজ হয়। বন্যার সময় কিছুদিন কাজ বন্ধ ছিল। এরপর আবার কাজ শুরু হলেও বেশিরভাগ কাজ হচ্ছিল রাতে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। শুক্রবার রাতেও ওখানে কাজ হচ্ছিল।
স্থানীয় লোকজনের উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে জানান, উপহারের ঘরের কাজ হচ্ছে, ঘরের ভীমে অভিনব কায়দায় বাইরে চার টুকরা রড ঢুকিয়ে ভেতরে কোন রড দেওয়া হচ্ছে না। সিমেন্ট কম দেওয়া হচ্ছে। ঢালাই করা হচ্ছে ইটসলিং না করেই কাদা মাটির উপর মসলা তৈরি করে।
দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক জানান, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে অনিয়ম হওয়ায় শুরুতেই স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা প্রতিবাদ করেন। তারা উপজেলা প্রশাসনকে ঠিকাদার তাজির উদ্দিনের অনিয়মের কথা জানান। ওইসময় প্রতিবাদকারীদের উল্টো হেনস্তা করায় অনিয়ম বেশি হতে থাকে।
গৃহ নির্মাণ কাজের ঠিকাদার তাজির উদ্দিন বলেন, গৃহ নির্মাণের জন্য কমিটি আছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সভাপতি এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সেক্রেটারি। আমি মালামাল সরবরাহ করি। আমি ঠিকাদার নই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা প্রিয়াঙ্কা জানান, ঠিকাদারকে নিজ খরচে ভেঙে দেওয়া অংশে কাজ করে দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।