পাক যুদ্ধজাহাজকে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি বাংলাদেশ

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে প্রবেশের অনুমতি চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর শেষে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর বন্দরে ভিড়েছে পাকিস্তান নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ পিএনএস তৈমুর। বুধবার (১০ আগস্ট) বন্দরে পৌঁছানোর পর বন্দর কর্তৃপক্ষ জাহাজটিকে নোঙ্গর করার অনুমতি দেয়।

চলতি সপ্তাহে কলম্বোর বন্দরে চীনের একটি জাহাজ প্রবেশের অনুমতি চেয়েছিল। শুরুতে এ বিষয়ে নিমরাজি থাকলেও ভারতের আপত্তির কারণে মঙ্গলবার চীনের সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘না’ বলে দেয় শ্রীলঙ্কার সরকার। তার একদিন পরই সে বন্দরে ভিড়ল পাকিস্তানের যুদ্ধজাহাজ, যেটি তৈরি হয়েছে চীনে।

পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ভারতের জাতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাইয়ের বন্দর থেকে রওনা হয়ে গত ৭ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দরের কাছাকাছি এসে পৌঁছায় পিএনএস তৈমুর এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে নোঙ্গর করার অনুমতি চায়।

দুইদিন পর ৯ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, সেখানে জাহাজটিকে নোঙ্গর করার অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের জবাব পাওয়ার পর সেখান থেকে কলম্বোর উদ্দেশে রওনা দেয় পিএনএস তৈমুর। পরের দিন বুধবার পৌঁছায়।

চট্টগ্রাম বন্দরের একটি সূত্র টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছে, আগস্ট মাস বাংলাদেশে শোকের মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কিছু বিপথগামী কর্মকর্তার হাতে সপরিবারে নিহত হন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, যার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানের মানচিত্র থেকে বিচ্ছিন্ন স্বাধীন বাংলাদেশের উদ্ভব হয়েছিল। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা ওই কর্মকর্তারা সবাই ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে আগত ও পাকিস্তানের সমর্থক।

‘বাংলাদেশের জন্য আগস্ট শোকের মাস। এ কারণেই পিএনএস তৈমুরকে (বন্দরে অবস্থানের) অনুমতি দেওয়া হয়নি,’ টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছে চট্টগ্রাম বন্দর সূত্র।

সাংহাইয়ের ডং বন্দরে তৈরি হওয়া পিএনএস তৈমুর বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আধুনিক ও দুর্ধর্ষ ০৫৪ এ/পি ধরনের যুদ্ধজাহাজ। ০৫৪ এ/পি ধরনের যুদ্ধজাহাজগুলোকে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যুদ্ধজাহাজ বলে মনে করা হয়ে এবং এসব জাহাজ উচ্চ প্রযুক্তির সমরাস্ত্র সমৃদ্ধ।

কলম্বো বন্দরের এক কর্মকর্তার মন্তব্যেও এ বিষয়টির আভাস পাওয়া গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী পিএনএস তৈমুরে বেশ কিছু লেজার গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক অস্ত্র রয়েছে। আগামী ১২ আগস্ট এটি কলম্বো থেকে করাচি বন্দরের দিকে রওনা হবে।’