কঠোর কর্মসূচির দিকেই এগুচ্ছে ওসমানীর আন্দোলন

বারবার আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর এবার কঠোর কর্মসূচির দিকেই এগুচ্ছে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলন।

এর অংশ হিসেবে আজ বুধবার সকাল ১১টার মধ্যে অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ও কার্ডিওলজি বিভাগসহ সকল বিভাগে তাদের কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

পাশাপাপাশি তারা সিওমেক এর মূল ফটক ও হাসপাতালের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচির পালনেরও ঘোষণা দিয়েছে তারা। এছাড়া পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী কলেজের ক্লাস-পরীক্ষাও বন্ধ থাকবে। সিওমেক এর সব শিক্ষকও তাদের কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ডা. মো. সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন- দাবী অনুযায়ী বুধবারও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও হাসপাতালে কর্মবিরতি পালন করবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি সকাল ১১টা থেকেই অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা। শিক্ষার্থিদের উপর হামলা ও ইন্টার্ন চিকিৎসককে শ্লীলতাহানির চেষ্টাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি আসবে।

এর আগে মঙ্গলবার (২ আগস্ট) বেলা আড়াইটায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসে ওসমানী মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ও পুলিশ প্রশাসন। বিকেল সাড়ে ৪টায় বৈঠক শেষ হলেও ফলপ্রসূ কোনো সমাধান আসেনি। ফলে বৈঠক থেকে বের হয়েই আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

সেসময় শিক্ষার্থীরা জানান, সিসিটিভিতে ধরা পড়া মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার না করা হলে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলবে।

এদিকে দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহানির চেষ্টার ঘটনায় ৮ জনকে আসামি করে দুটি মামলা করেছে ওসমানী হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষ। একটি মামলায় ৭ জন এবং অপর মামলায় ১ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ২-৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

দুই মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বহিরাগতরা এখনও তাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। ফলে তারা নিরাপত্তা চান। যদিও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাজনিত সকল দাবি মেনে নেয়া হয়েছে বলে জানান বৈঠকে উপস্থিত মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সুধিজনেরা।

প্রসঙ্গত, তিনদিন আগে চিকিৎসকের স্বজনদের সাথে ইন্টার্ন চিকিৎসকের হাতাহাতির জের ধরে সোমবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় কলেজের ভেতরে অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বহিরাগতরা। এতে সিওমেক’র দুই শিক্ষার্থী আহত হন। এর প্রতিবাদে সোমবার রাত ১০টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুইজনকে আটক করলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। তবে ঘটনার পর থেকেই মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।