দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কর্মরত চীনা ও বাংলাদেশি ৫২ জন শ্রমিকের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর ফলে পরীক্ষামূলক উত্তোলনের তিন দিনের মাথায় আবারও কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম জানান, শনিবার (৩০ জুলাই) সকাল থেকে পরীক্ষামূলক কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে চীনা ও দেশি শ্রমিক রয়েছেন।
এর আগে গত ২৭ জুলাই সকাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করা হয়। আগামী ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যেই এই খনি পূর্ণাঙ্গ উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল, যাতে প্রতিদিন ২৭০০ থেকে ৩০০০ মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন হবে বলে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ২০ দিন আগে থেকে প্রাথমিকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করেছি। প্রথম সাত দিন প্রাথমিকভাবে কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে। পরে চূড়ান্তভাবে কয়লা উত্তোলন করা হয়। কিন্তু এরই মধ্যে কয়েকজন শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। খনিতে কর্মরত চীনা শ্রমিকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আগের মতো যারা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের খনির বাইরে রেখে নতুন করে খনিতে প্রবেশ করানো হবে। যারা করোনা আক্রান্ত চীনা শ্রমিকদের সংস্পর্শে গেছেন, তারা এখন খনির বাইরে আছেন। যেসব শ্রমিক বাইরে গেছেন সুস্থ হওয়ার পর তাদের দ্রুত খনিতে ফিরিয়ে আনা হবে। খনিতে যারা করোনা আক্রান্ত হননি, তাদের দিয়ে প্রাথমিকভাবে কয়লা উত্তোলনের কূপের উন্নয়ন কাজ করানো হচ্ছে।’
জানা গেছে, গত ২৭ জুলাই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির নতুন কূপে কয়লা উত্তোলন কার্যক্রম শুরু করে কর্তৃপক্ষ। খনিতে ৩০০ জন চীনা ও ৪০০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক অবস্থিত করছিলেন। এর মধ্যে ১৪৩ জন শ্রমিকের নমুনা পরীক্ষা করা হলে ১৬ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ২৮ জুলাই ৩০৫ জন চীনা ও বাংলাদেশি শ্রমিকের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৩৪ জন চীনা ও দুই জন বাংলাদেশি শ্রমিকের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
গত ৩০ এপ্রিল উত্তোলনকৃত ১৩১০ নম্বর ফেইজ থেকে মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় এই খনিতে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। পরের ফেইজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর পরিত্যক্ত ফেইজের ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রপাতি স্থানান্তর ও নতুন প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসিয়ে ১৩০৬ নম্বর ফেইজ থেকে কয়লা উত্তোলন প্রক্রিয়া শুরু করে কর্তৃপক্ষ।
ওই সময়ে বলা হয়েছিল, নতুন ফেইজ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন করে কয়লা উত্তোলনে সময় লাগবে প্রায় আড়াই মাস। পরে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে কয়লা উত্তোলনের সময়ও নির্ধারণ করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু চলমান বিদ্যুৎ সংকটের কারণে দ্রুত কয়লা উত্তোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। অবশেষে গত ২৭ জুলাই সকাল সাড়ে ৯টায় খনির নতুন ফেইজ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কয়লা উত্তোলন শুরু করে কর্তৃপক্ষ।