মানবতাবিরোধী অপরাধ: খুলনার ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খুলনার বটিয়াঘাটার ছয় আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদান করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ২০৩ পৃষ্ঠার এ রায় ঘোষণা করেন।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মো. মোখলেসুর রহমান বাদল ও প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি। অন্যদিকে আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান ও রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী গাজী এইচএম তামিম।

মামলার আসামিরা হলেন- আমজাদ হোসেন হাওলাদার, সহর আলী সরদার, আতিয়ার রহমান, মোতাছিম বিল্লাহ, কামাল উদ্দিন গোলদার ও নজরুল ইসলাম। তাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম এখনও পলাতক।

এর আগে ২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর মামলার তদন্ত শুরু করে ২০১৭ সালের ৮ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে সাত ভলিউমের ১ হাজার ২৭ পাতার প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখিত চারটি অপরাধেই অভিযুক্ত হয়েছেন আমজাদ হোসেন হাওলাদার। প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কনভেনশন মুসলিম লীগ এবং পরে জামায়াতের সমর্থক ছিলেন। অন্য ছয় আসামিও মুক্তিযুদ্ধকালে কনভেনশন মুসলিম লীগ এবং জামায়াতের সমর্থক ছিলেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো

এক. ১৯৭১ সালের ১০ আগস্ট আমজাদ হোসেন হাওলাদারসহ চার-পাঁচ জন রাজাকার বটিয়াঘাটার মাছালিয়া গ্রামের শান্তি লতা মণ্ডলের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বিনোদ মণ্ডলকে অবৈধভাবে আটক-নির্যাতন, অপহরণ ও গুলি করে হত্যা করে।

দুই. ১৯৭১ সালের ১৫ অক্টোবর বটিয়াঘাটার পূর্বহালিয়া গ্রামের চাপরাশী বাড়িতে হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র হরিদাস মজুমদারকে আটক, নির্যাতন ও গুলি করে হত্যা করেন আসামিরা।

তিন. মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ২১ অক্টোবর হিন্দু সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করতে বটিয়াঘাটার সুখদাড়া গ্রামে হামলা চালিয়ে নিরীহ নিরস্ত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের চার জনকে হত্যা, চার-ছয়টি বাড়ির মালামাল লুট এবং অগ্নিসংযোগ করে।

চার. ১৯৭১ এর ২৯ নভেম্বরে এই আসামিরা বটিয়াঘাটার বারোআড়িয়া গ্রামে হামলা চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধা জ্যোতিষ মণ্ডল এবং আব্দুল আজিজকে গুলি করে হত্যা করে।