শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বুলবুল আহমেদকে হত্যার ঘটনায় সেই ছাত্রীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে তাকে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই ছরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করা হলেও হত্যাকান্ডে সরাসরি ৩ জনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করেছিলেন কামরুল আহমেদ (২৯) নামের এক যুবক। তবে এ ঘটনায় বুলবুলকে হত্যার সময় উপস্থিত থাকা ছাত্রীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় নি।
বুধবার দুপুর দুইটার দিকে জালালাবাদ থানায় সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামিরা বুলবুলের কাছে মোবাইল মানিব্যাগ দাবি করে। বুলবুল এগুলো দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে বুলবুল পরে গেলে রক্ত দেখে তারা মোবাইল নিয়ে দ্রæত পালিয়ে যান। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে হতে পারে।’
আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘বুলবুলকে ছুরিকাঘাত করেন কামরুল ইসলাম। এ সময় তার সঙ্গে আবুল হোসেন (১৯) ও মো. হাসান ছিলেন (১৯)। তাদের সবার বাড়ি টিলাগাঁও এলাকায় এবং তারা সবাই পেশায় রাজমেস্ত্রী। এদিকে হত্যার ঘটনায় বুলবুলের সাথে উপস্থিত থাকা ছাত্রীর সম্পৃক্ততা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।’
পুলিশ কর্মকর্তা আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে টিলাগাঁও এলাকার আবুল হোসেন হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তার তথ্যের ভিত্তিতে একই এলাকার কামরুল আহমদ ও মো. হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারাও জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় জড়িত থাকার কথা জানায়।’
‘হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও বুলবুলের খোঁয়া যাওয়া ফোনের বিষয়ে কামরুল জানায়, ওই ফোন ও অস্ত্র তার বাসায় আছে। তখন তাকে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। তার ঘরের সিলিংয়ের পশ্চিম দিক থেকে বুলবুলের অপ্পো মডেলের ফোন উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ঘরের দক্ষিণ দিকের সানশেডের এক কোণা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ।’
ঘটনায় অন্যকেউ জড়িত আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আজবাহার আলী বলেন, আটতকৃতদের ফোন কল চেক করে এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অন্য কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাটি তদন্ত চলমান রয়েছে।
এ ঘটনায় সেই ছাত্রীর সম্পৃক্ততা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুলবুলের বান্ধবীকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছি তার তার সাথে বুলবুলের সম্পর্ক ছিল, তারা সেখানে ঘুরতে যায়। এতে তাদের একা পেয়ে বুলবুলকে ছুরিকাঘাত চিন্তাইকারীরা। পরে শুধুমাত্র তার মোবাইল নিয়ে যায়, তবে তার বান্ধবী হত্যাকাণ্ডে জড়িত আছে এমন কোন আলামত জিজ্ঞাসাবাদ করে ও মোবাইল চেক করে পাওয়া যায়নি।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে হসপিটাল থেকে পালিয়ে যান সেই ছাত্রী। এ বিষয়ে আজ বাহার আলী বলেন, ছাত্রী তার বান্ধবীর কাছে শুনেছে বুলবুলে লাশ বিকেলে ক্যাম্পাসে আনা হবে। তাই তার শেষ চেহেরাটা দেখার জন্য সে কাউকে কিছু না বলে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে। তবে পরে ক্যাম্পাস থেকে তাকে আটক করা হয়।