মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও গ্রামের ক্ষেতের মাঠ থেকে বিরল প্রজাতির ৫ কেজি ওজনের ৬ ফুট লম্বা একটি গুঁইসাপ উদ্ধার করা হয়েছে। বকের দলে হামলা চালাতে গিয়ে বকের উড়াউড়ি দেখে কিশোররা মাঠে গিয়ে গুঁইসাপটি ধরে ফেলে। সেটিকে উদ্ধার করে পরে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পাঁচগাঁও ক্ষেতের মাঠে প্রচুর সাদা বকের আগমন ঘটে। বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বিকেলে গুঁইসাপটি শিকারের লক্ষ্যে বকের সারিতে হামলা চালায়। এ সময় পাশের আবুল কালাম আজাদের বাড়ির কিশোর সুমেল, রুমেল ও লিকসন বকের উড়াউড়ি দেখতে পেয়ে মাঠে যায়। সেখানে গিয়ে তারা গুঁইসাপটি দেখতে পেয়ে আটক করে।
স্থানীয় সমাজসেবক মজর মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা একই উপজেলার মশুরিয়া গ্রামেরবলে গুঁইসাপটিকে ছেড়ে দিয়েছি। এটি দেখতে তামাটে লালচে বর্ণের। এই ধরনের গুঁইসাপ সচরাচর এই এলাকায় এখন আর দেখা যায় না।
তিনি জানান, গুঁইসাপ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন সাপটি দেখার জনন্য ভিড় করেন এবং তারা এটিকে না মেরে বনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেন। পরে সেটি একটি ব্যাগে বন্দি করে মশুরিয়া গ্রামের পাতা বনে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় ষাটোর্ধ আবেদা বেগম বলেন, আমরা ছোটবেলায় এরকম অনেক গুঁইসাপ দেখতাম। বাড়ির বাগানে ঘোরাঘুরি করত। এখন বিশ বছরের মধ্যেও এরকম বড় আকারের গুঁইসাপ আর দেখিনি।
রাজনগর উপজেলার প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা নিবাস চন্দ্র পাল বলেন, গুঁইসাপ পরিবেশবান্ধব ও মানুষের জন্য অনেক উপকারী একটি প্রাণী। একে আমাদের বাঁচিয়ে রাখা দরকার। গুঁইসাপ নোংরা ময়লা, বিষাক্ত পোকা-মাকড়, ইঁদুর ও বিষাক্ত সাপসহ ডিম খেয়ে বেঁচে থাকে। এতে মানুষ অনেকটা নিরাপদে বসবাস করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, এই প্রাণী বর্তমানে অনেকটা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। না বুঝে মানুষ এটিকে নির্বিচারে হত্যা করে ফেলে। আবার অনেকে গুঁইসাপ মেরে টাকার লোভে চামড়া বিক্রি করে। অনেক আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন এটির মাংস খাওয়ার ফলেও বিলুপ্ত হয়ে গেছে।