আওয়ামী লীগ লুটপাটে ব্যস্ত : সিলেটে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার কখনও জনগণের ভালো চায় না। তারা জনকল্যাণে কাজ না করে লুটপাটে ব্যস্ত। তারা বড় বড় মেগা প্রকল্পের নামে দুর্নীতি করে জনগণের সম্পদ লুটপাট করছে। চলমান বন্যায় সিলেটবাসীর এই ভয়াবহ দুর্যোগে তারা জনগণের পাশে নেই। বরং সিলেট যখন পানিতে ডুবছে, তখন সরকার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের নামে বিদেশি শিল্পী এনে নাচ-গান করে জনগণের সাথে তামাশা করেছে। আওয়ামী লীগ জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তাই পুরোদমে ব্যর্থ এই সরকারকে ক্ষমতার মসনদ থেকে বিতাড়িত করতে হবে। চলমান বন্যার পরে একদফা আন্দোলনের মাধ্যমে এই লুটেরা বাকশালী সরকারের পতন ঘটানো হবে।

সোমবার (৪ জুলাই) সকালে সাবেক মন্ত্রী মরহুম রিয়ার এডমিরাল (অব:) মাহবুব আলী খানের মেয়ে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবায়দা রহমানের পক্ষ থেকে সিলেট জেলা বিএনপির তত্ত্বাবধানে ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির ব্যবস্থাপনায় উপজেলার এক হাজার বন্যার্ত মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ডা. জোবায়দা রহমান ঐতিহ্যবাহী পরিবারের সন্তান। উনার পূর্বপুরুষরা যেভাবে দেশের মাটি ও মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন সেই ধারাবাহিকতায় তিনিও দেশবাসীর যে কোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ান। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই স্বৈরাচারী সরকার উনার নামেও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে, যা একটি স্বাধীন দেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। দেশের জনগণ একদিন এর দাঁতভাঙা জবাব দেবে।

দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কোহিনুর আহমদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বিএনপির মিডিয়া সেলের প্রধান ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, এই ভয়াবহ বন্যায় সিলেটবাসী আওয়ামী লীগের নেতাদের দেখা পায়নি। একমাত্র বিএনপি এবং সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাই বন্যার শুরু থেকে বানভাসি মানুষদের জন্য কাজ করছে। এটাই হচ্ছে জনগণের দল বিএনপি ও ভোটচোরের দল আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য।

সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, নিশিরাতের ভোটচোরের সরকারের সাথে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ তারা জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতা দখল করে আছে। এজন্যই আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে নেই।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, জোর করে ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী লীগ বাকশালী স্টাইলে দেশ পরিচালনা করছে। তারা জনগণের দুঃখ কষ্ট বোঝে না। এজন্য জনবিচ্ছিন্ন এই বাকশালী সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।

জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বন্যার শুরু থেকে সিলেট জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা পানিবন্দি মানুষেদের পাশে আছেন। প্রতিদিনই জেলায় বিভিন্ন এলাকায় আমাদের নেতারা খাদ্যদ্রব্যসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপকরণ বানভাসি মানুষদের মাঝে পৌঁছে দিচ্ছেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন বন্যা শেষ হওয়ার পরও যেন আমরা মানুষের পাশে থাকি। এই সরকার আর বেশিদিন তারেক রহমানকে আমাদের কাছ থেকে দূরে রাখতে পারবে না। ইনশাআল্লাহ তারেক রহমান বীরের বেশে প্রিয় জন্মভূমিতে ফিরে আসবেন।

তিনি বলেন, সাবেক মন্ত্রী মরহুম রিয়ার এডমিরাল (অব:) মাহবুব আলী খান সিলেটবাসীর কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার মানুষ। এই পরিবার আদিকাল থেকেই মানুষের কল্যাণে কাজ করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় উনার সুযোগ্য কন্যা সিলেটবাসীর এই দুর্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমরা সিলেটবাসী এজন্য কৃতজ্ঞ।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ জিয়া পরিবারকে ভয় পায়। এজন্যই আমাদের নেত্রীকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দিয়ে আটকে রেখেছে। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিচ্ছে না। তারেক রহমানকে দেশে ফিরতে দিচ্ছে না। তারেক রহমান যেদিন দেশে ফিরবেন, সেদিন আওয়ামী লীগের নেতারা পালাবার রাস্তাও খুঁজে পাবে না।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. এনামুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুজাত মিয়া ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপি নেতা ইসতিয়াক আহমদ সিদ্দিকি, অ্যাডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, মামুনুর রশীদ মামুন, আব্দুল আহাদ খান জামাল, মাহবুবুল হক চৌধুরী, এ কে এম তারেক কালাম, মো. তোফাজ্জল হোসেনে, আবুল কাশেম, মো. গোলাম রাব্বানী, মো. তাজরুল ইসলাম তাজুল, অধ্যাপক নিজাম উদ্দিন তরফদার, কামাল হাসান জুয়েল, অ্যাডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মোমিন, অ্যাডভোকেট সাইদ আহমদ, লোকমান আহমদ, মো. মকসুদ আহমদ, দেওয়ান জাকির হোসেন খান, আজিজুল হোসেন আজিজ, আলতাফ হোসেন সুমন, ফজলে রাব্বি আহসান প্রমুখ।