নিজের মেয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন এক মা। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বেলা আড়াইটায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ডেকে নিজের মেয়ে জাহেদা আক্তার শান্তার মিথ্যাচারের প্রতিবাদ এবং তার অন্যায়ের ফিরিস্তি তুলে ধরেন রাজধানী ঢাকার সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা ঝর্ণা বেগম। ঝর্ণা বেগমের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন শান্তার ছোট বোন আয়েশা আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা জানান, জাহেদা আক্তার শান্তা সিলেটের পরিচিত ব্যবসায়ী মো. নজরুল ইসলাম বাবুলের স্ত্রী ছিলেন। বাবুল-শান্তা দম্পতির এক যুগের সংসার জীবনের ইতি ঘটেছে সম্প্রতি। এই বিচ্ছেদের পেছনে কারণ হিসেবে রয়েছে শান্তার উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন ও উচ্চাভিলাসী মানসিকতা। পরিবারের বন্ধনের চেয়ে অর্থ-সম্পত্তির লোভই তাকে গ্রাস করেছে। প্রাচুর্যের এমনকি মাদকের নেশার কারণে তাদের পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। প্রতিনিয়ত মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েও সমাজে নিজের অবস্থান ও লোকলজ্জার ভয়ে নজরুল ইসলাম বাবুল নিজের দুঃখ কারও কাছে প্রকাশ করেননি। এত অশান্তির পরও দুঃখ-কষ্ট বুকে চেপে তিনি সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু একসময় সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায় বাবুলের এবং তিনি শান্তাকে তালাক দেন। তবুও শান্তি পাননি বাবুল। শান্তা তাকে ফোনে নানাভাবে হুমকি প্রদান করতে থাকেন। বাধ্য হয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করেন। এরপরও শান্তা থেমে থাকেননি। তিনি বাবুলের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা আক্তার মায়ের পক্ষে আরও জানান, নজরুল ইসলাম বাবুল শান্তাকে স্ত্রী হিসেবে যথেষ্ট সম্মান ও মর্যাদা দিয়ে আসছিলেন। এমনকি শান্তার প্রথম পক্ষের ছেলে-মেয়েকেও মেনে নেন তিনি। কিন্তু শান্তা তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও বিলাসী জীবনের কারণে নিজের মর্যাদা ধরে রাখতে পারেননি। ভেঙে যায় তার ১২ বছরের সংসার। শান্তার নামে একটি বাসা ও একটি প্রতিষ্ঠানও করে দেন বাবুল। প্রায় ৪ কোটি টাকা পুঁজি দিয়ে গড়া মোহাম্মদ আলী স্টিচ নামের প্রতিষ্ঠানের পুরো বিনিয়োগই বাবুলের। যে প্রতিষ্ঠান থেকে মাসে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আয় হলেও এর একটি টাকাও নেন না তিনি। এরপরও শান্তার টাকার চাহিদা কমেনি। শান্তা তার প্রথম পক্ষের মেয়ের জামাই মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে যোগসাজশে বারবার নজরুল ইসলাম বাবুলকে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন এবং পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি করতে থাকেন। গত রমজানেও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের কথা বলে শান্তা ৩০ লাখ ঋণ নেন বাবুলের কাছ থেকে। যার একটি টাকাও ফেরত দেননি শান্তা। এ নিয়ে আবারও সংসারে অশান্তি দেখা দেয়।
আয়েশা জানান, বাবুল সম্প্রতি তার ছেলে মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে যুক্তরাজ্য সফরে গেছেন। কিন্তু শান্তা প্রচার করছেন বাবুল তার ছেলেকে আটকে রেখেছেন। অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। সম্প্রতি মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে ফোনে শান্তার মায়ের কথা হয়েছে। সে ভালো আছে। তার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সেটা নবায়ন করতে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে বাবুলের দেশে ফিরতে দেরি হচ্ছে।
জাহেদা আক্তার শান্তার মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাহেদা আক্তার শান্তার মা ঝর্ণা বেগম, ছেলে জুবায়ের ইসলাম আমান ও ছোট বোন সালমা ইসলাম।