সিলেটে চলতি মাসে হয়ে গেছে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা। এতে বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গৃহহীন হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন বহু মানুষ। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে হাহাকার করছেন তারা। যদিও সরকারি, বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে চলছে খাদ্য সহায়তাসহ অন্যান্য ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম।
এবারের ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত সিলেটের ২১ লক্ষ ৯৬ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (২৮ জুন) এ তথ্য জানিয়েছে সিলেট জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, সিলেটের ১৩টি উপজেলা, ৫টি পৌরসভা ও একটি সিটি কর্পোরেশনের ৪ লক্ষ ১৬ হাজার ৯৬৬টি পরিবার পানিবন্দি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২১ লক্ষ ৯৬ হাজার ৬৬৫ জন।
বন্যার্তদের জন্য ১ হাজার ৬১২ মেট্রিক টন চাল, ২০ হাজার ২১৮ বস্তা শুকনো খাবার ও ১ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা নগদ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে এবং এর সাথে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে আরও ৬৫ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত সিলেটে বন্যার পানির স্রোতে ভেসে ৬ জন, নৌকাডুবিতে ২ জন ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও জানানো হয়, জেলায় মোট ৬ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র থাকলেও পানি কমে যাওয়ায় বর্তমানে ৪৬৮টি আশ্রয়কেন্দ্র চালু রয়েছে। আশ্রিত মানুষের সংখ্যা ৪০ হাজার ৪৬৪ জন। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা নারীদের জন্য আলাদা নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
এদিকে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান মঙ্গলবার গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাদেপাশা ইউনিয়নের বাগলা শাহী ঈদগাহ বাজারে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ ও শিশুখাদ্য বিতরণ করেছেন। ত্রাণ বিতরণ শেষে তিনি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং বন্যার সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক জানান, বন্যায় যাদের বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে তালিকা প্রস্তুত করছেন। তালিকা অনুযায়ী সবাইকে পুনর্বাসনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।