বন্যার কারণে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রগুলোতে পানি ঢুকে পড়ায় এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বাসিন্দারা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে তারা। কবে নাগাদ বিদ্যুৎ–সংযোগ চালু হবে, সেটিও নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না উপজেলা বিদ্যুৎ বিভাগ।
এলাকাবাসী ও বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার জেলাজুড়ে তুমুল বৃষ্টি শুরু হলে জগন্নাথপুর উপজেলার বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
গেল শুক্রবার থেকে সিলেট ও জগন্নাথপুরে বন্যা দেখা দেয়। বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি ঢুকে পড়ে। ভয়াবহ বন্যা ও বিদ্যুৎ–সংযোগ না থাকায় চরম বিপর্যয়ে পড়তে হয় মানুষকে। বিদ্যুৎ না থাকায় মুঠোফোনের নেটওয়ার্কও বন্ধ হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলায় মুঠোফোনের নেটওয়ার্ক পুরোপুরি সচল হয়নি। কেবল শহরের একটি অংশে আংশিক নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। বিদ্যুৎ–সংযোগ ও নেটওয়ার্ক না থাকায় অনলাইন ব্যাংকিং সেবাও বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম সংকটে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
জগন্নাথপুর পৌর এলাকার জগন্নাথপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রবীণ সাংবাদিক শংকর রায় বলেন, এমন বিপর্যয় আগে কখনো দেখেননি তিনি। ১৯৮৮ ও ২০০৪ সালের ভয়াবহ বন্যায়ও এত দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকতে দেখেননি। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও মুঠোফোন নেটওয়ার্ক না থাকায় জগন্নাথপুরের ভয়াবহ বন্যার খবরও পাঠাতে পারছেন না তাঁরা।
ব্যানায় কবলিত ব্যবসায়ী নিকলেশ রায় বলেন, কয়েক দিন ধরে বিদ্যুৎ থাকায় আমরা ডাকাতির আতংকে রয়েছি।রাতে পৌর শহর অন্ধ থাকে।
জগন্নাথপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্ব বৈদ্য বলেন- ‘বিদ্যুৎ থাকায় আমাদের বাজার অন্ধকার থাকে। চুরি ডাকাতির ভয় রয়েছে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয়ের অফিস সহকারী ধীরেন্দ্র সূত্রধর বলেন, জুনে কাজের অনেক চাপ। কার্যালয়ে বন্যাকবলিত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় বিপাকে পড়েছে সবাই।
জগন্নাথপুর উপজেলা বিদ্যুৎ কার্যালয়ের আবাসিক প্রকৌশলী আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যার পানিতে সিলেট ও জগন্নাথপুর উপজেলার বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি ঢুকে পড়ায় বিদ্যুৎ–সংযোগ বন্ধ ছিল। এখন পানি কমতে শুরু করেছে। শহরের কিছু এলাকায় আজ থেকে বিদ্যুৎ-সংযোগ চালুর চেষ্টা করছি।’