সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটে টিলা ধসে মাটি চাপায় পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি পরিবেশবাদী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা জরুরি ভিত্তিতে টিলার পাদদেশে বসবাসকারী জনগণের তালিকা করে পুর্নবাসনের ব্যবস্থা, টিলা কাটা বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
তারা বলেন, টিলা কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে টিলা ধ্বস ও মৃত্যু থামানো যাবে না।
গত ৬ জুন জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের সাতজনি গ্রামে টিলা ধসে নারী ও শিশুসহ একই পরিবারের চারজন মারা যান। এছাড়া ১৪ মে গোলাপগঞ্জে টিলা ধসে আরেকজন মারা যান।
এই দুই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা আখতার, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট ও হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারস নেটওয়ার্ক, সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম, সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, ব্লাস্ট সিলেট ইউনিটের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মো. ইরফানুজ্জামান চৌধুরী, আইডিয়ার নির্বাহী পরিচালক নজমুল হক, মনিপুরি সাহিত্য সংসদের সভাপতি একে শেরাম, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সিলেটের সভাপতি সমিক শহিদ জাহান, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, সিলেটের বিভাগীয় প্রধান অ্যাডভোকেট সৈয়দা শিরীন আক্তার, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম ও একডোর নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহ।
বিবৃতিদাতারা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, টিলা-পাহাড় কাটা দিনদিন বেড়েই চলছে। অবৈধভাবে টিলা ও পাহাড়ের মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ার কারণে যেমন পরিবেশ ও প্রতিবেশগত অবস্থা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে তেমনি ভূমির স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়ে ভূমি ধসে প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটছে।
টিলা ধসের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট এলাকাসমূহ পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ধসে যাওয়া টিলাগুলো কেটে মাটি অপসারণ করা হয়েছে এবং কর্তনকৃত অংশে বসতঘর নির্মাণ করে লোকজন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনসহ সদর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারে টিলা কাটা রোধে বেলা আদালতে রিট আবেদন করে। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালে ১ মার্চ উচ্চ আদালত পাহাড় ও টিলা কাটা রোধ করে তা যথাযথভাবে সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। টিলার পাদদেশে বসবাসকারী দরিদ্র জনগণকে পুনর্বাসরেন ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন।