সিলেটের জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে দোয়ারাবাজার থানা পুলিশের সহায়তায় আলোচিত শিশুকন্যা হত্যায় ঘাতক পিতা ইমরানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার রাত সাড়ে ১০টায় দোয়ারাবাজার সদর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া জৈন্তাপুরের ট্রাক চালক ইমরান গত (১৯শে জানুয়ারি) হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় তার ১৫ মাস বয়সী কন্যা সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করে।
এ ঘটনায় গত (১লা ফেব্রুয়ারি) নিহত কন্যা সন্তানের মা ইয়াসমিন আক্তার বাদী হয়ে প্রাক্তন স্বামী ঘাতক ইমরান ও হেলপার বাদলকে আসামি করে বানিয়াচং থানায় মামলা দায়ের করে।
এদিকে মামলা দায়েরের পর পলাতক আসামি ইমরান ও হেলপার বাদলকে গ্রেপ্তারে অনুসন্ধান চালাতে থাকে বানিয়াচং ও জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ।
ঘাতক পিতা ইমরানের বাড়ী জৈন্তাপুর উপজেলার লালাখালের নয়াখেল গ্রামে। তার পিতা মুহাম্মদ আলি। এদিকে মামলা দায়েরের ৪ দিনের মাথায় প্রযুক্তির ব্যবহার করে ঘাতক ইমরানকে গ্রেফতার করে জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) জৈন্তাপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সাহিদ মিয়া প্রযুক্তির সহায়তায় ঘাতক পিতা ইমরানের অবস্হান নিশ্চিত করেন দোয়ারাবাজার উপজেলায়।
পরে রবিবার রাত সাড়ে ১০টায় জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশ দোয়ারাবাজার থানা পুলিশের সহায়তায় দোয়ারাবাজার সদর থেকে গ্রেফতার করে ঘাতক পিতা ইমরানকে।
এ বিষয়ে জৈন্তাপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম (পিপিএম) ঘাতক ইমরানকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রাতেই আটক ইমরানকে বানিয়াচং থানায় পুলিশ হেফাজতে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সোমবার সকালে হবিগঞ্জ জেলা আদালতে আসামি ইমরানকে বানিয়াচং থানা পুলিশ হেফাজতে হাজির করা হলে সে বিজ্ঞআদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যায় জড়ীত থাকার কথা স্বীকার করে।
উল্লেখ্য, আসামি ইমরান জৈন্তাপুর উপজেলায় গর্দনা গ্রামের ইয়াসমিন আক্তার নামে এক মহিলাকে তিন বছর আগে বিয়ে করেন। ইয়াসমিনের আগের সংসারে ছয় বছর বয়সী এক ছেলে ও ইমরান ও ইয়াসমিনের সংসারে ১৫ মাস বয়সী এ্যানি নামে এক মেয়ে ছিলো।
ছয় মাস আগে তাদের ডিভোর্স হলে, ইমরান প্রতিমাসে তার কন্যার ভরণপোষণের জন্য দুই হাজার টাকা করে দিয়ে আসছিলো। ২৯ তারিখ ইয়াসমিন মেয়ে এ্যানির অসুস্থতার কথা বলে টাকা চাইলে রাতে সিলেট নগরীর বাইপাস থেকে মা মেয়ে ছেলেকে ট্রাকে তুলে নেয় ইমরান।
পরে গভীররাত সাড়ে তিনটার সময় বানিয়াচং উপজেলার ৬ নং কাগেপাশা ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত নবীগঞ্জ টু বানিয়াচং সড়কের বড়ভাঙ্গা নামক এলাকায় একটি ব্রীজ থেকে শুটকি নদীতে কন্যা সন্তান এ্যানিকে ফেলে দেয় ঘাতক পিতা ইমরান। পুলিশ পরেরদিন নিহত এ্যানির মরদেহ উদ্ধার করে।