চারজন পরিচালক প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে আবাসন এসোসিয়েট এবং আবাসন ডেভেলপারস লি. এর চেয়ারম্যন মাহবুবুল হক শেরীন, সাবেক এমডি আব্দুল হামিদ এবং প্রকল্প পরিচালক মো. নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও সাজানো মামলা দেওয়া হয়েছে। কোম্পানী দুটির চেয়ারম্যানকে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার ও হাইকোর্টে নির্দেশনা অমান্য করে হাত করা পড়িয়ে হয়রানি ও তাঁর সম্মানহানি করা হয়েছে।
শনিবার (৮ অক্টোবর) বেলা ২টায় সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকায় একটি অভিজাত হোটেলের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন আবাসন কোম্পানী দুটির চেয়ারম্যন যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাহবুবুল হক শেরীন। এছাড়া জগন্নাথপুরের মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আবাসন এসোসিয়েট এবং আবাসন ডেভেলপারস এর চেয়ারম্যন, সাবেক এমডি এবং প্রকল্প পরিচালকের ওপর মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দেওয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ার আগেই আকষ্মিকভাবে সম্পূর্ণ বেআইনি পন্থায় কোম্পানীটির চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবশ্য তিনদিনের মাথায় জামিনে মুক্ত হন তিনি। তাঁর এই গ্রেপ্তার এবং হাতকড়াসহ ছবি যারা প্রচার করে নাটক সাজিয়েছে তাদের প্রতি ধিক্কার জানান। শুধু মাত্র সামাজিক মর্যাদাহানি ও সম্মানহানির জন্যই এই সাজানো মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে তাঁর প্রতি অন্যায় এবং জঘন্য আচরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন শেরীন।
জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের নির্বাচিত একজন চেয়ারম্যান এবং দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ী দাবি করে মাহবুবুল হক শেরীন বল্রন, ‘একটি ধান্দাবাজ চক্র সাজানো মামলায় হয়রানির পর নিজেরা উল্লাস প্রকাশ করছে এবং সেটি দেশ বিদেশের মিডিয়াসহ সামাজিক প্লাটফর্মে ছড়িয়ে দিয়ে ব্যক্তি শেরীন এবং আমাদের কোম্পানি আবাসনের সুনামখ্যাতি ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের এই নোংরামির ঘটনায় আবাসন পরিচালকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।’
শেরীন আরও বলেন, বর্তমানে অর্থনৈতিক মন্দা এবং প্রবাসীরা বিনিয়োগ বিমুখ হওয়াতে সকল পরিচালক মার্কেট নির্মান না করে ভূমি বিক্রি করে নিজেদের বিনিয়োগ ফিরিয়ে নিতে ঐক্যমত পোষণ করেছেন। ভূমি বিক্রি করতে দীর্ঘ দিন থেকে ক্রেতা খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু ভূমি এখনো বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। কোম্পানীর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য করা হয়েছে। এর পেছনে মূল ব্যক্তি হচ্ছেন তাঁরই গ্রামের বড় ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী ধান্দাবাজ এলাইছ মিয়া মতিন।
শেরীন বলেন, এলাইছ মিয়া মতিন তাঁর মাধ্যমে বিশ লাখ টাকা দিয়ে আবাসন গ্রুপে শরিক হন। মতিন অনেকবার অপচেষ্টা করেছেন তাকে সরিয়ে উক্ত কোম্পানির চেয়ারম্যান হতে। আমার জনপ্রিয়তায় ও সামাজিক মর্যাদায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এবং কোম্পানির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরাতে তিনি নানা কুটকৌশলের আশ্রয় নেন এবং ষড়যন্ত্র শুরু করেন। তিনি চরম হিংসাপরায়ণ হয়ে তার অনুগত ৪ জন পরিচালককে সাথে নিয়ে মামলা করান।
চেয়ারম্যান শেরীন বলেন, আবাসন গ্রুপের শুরু লগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত পরিবার পরিজন ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু পরিত্যাগ করে সকল পরিচালকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য বিশেষ করে প্রবাসীদের আমানত রক্ষার জন্য তিনি জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাচ্ছেন। এসবের পরেও যদি এরকম মানহানি এবং জেল জুলুমের সম্মুখীন হতে হয় তা খুবই বেদনাদায়ক। স্বার্থান্বেষী মহল গণমাধ্যমে তাকে একজন প্রতারক হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তা সর্বৈব মিথ্যা ও বানোয়াট। এসব করে আমার মানহানি করা হয়েছে যা তাদের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল।
আবাসনের পরিচালকদের টাকায় জায়গা ক্রয় করা হয়েছে। এখানে কোন টাকা আত্মসাৎ করা হয়নি। বর্তমানে এই জায়গার বাজার মূল্য প্রতি ডেসিমেল আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার মতো। এই হিসেবে এর মূল্য সর্বসাকুল্যে ৩০ কোটি টাকা হতে পারে। কিন্তু কিভাবে এই জায়গার মূল্য ১৫০ কোটি টাকা হয়ে গেল তা আমার বোধগম্য নয়। এখানে কিভাবে আমি ১৫০ কোটি টাকা জালিয়াতি করে হাতিয়ে নিয়েছি তা অবশ্যই মামলাবাজ ষড়যন্ত্রকারীদের প্রমাণ করতে হবে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে আবাসন এসোসিয়েট ও আবাসন ডেভেলপারস লি. এর পরিচালক অ্যাডভোকেট নুরুল আহমদ, মোস্তফা মতিন, ওলায়েত হোসেন লিটন, সাইফুল আলম, খিজির আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।