বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। এই চিন্তা থেকে এবার ৬৮ ধরনের পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে ৩ থেকে ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ মে) সকালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। নিয়ম অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন জারির সঙ্গে সঙ্গে তা কার্যকরও করা হচ্ছে।
এ তালিকায় আসবাব ও আসবাবের কাঁচামাল, গাড়ি ও গাড়ির ইঞ্জিন, যন্ত্রাংশ, রড ও লোহাজাতীয় পণ্য, সিমেন্টশিল্পের কাঁচামাল ফ্ল্যাই অ্যাশ, ফল, প্রসাধনী সামগ্রীসহ কিছু নিত্য ভোগ্যপণ্যও রয়েছে।
এরমধ্যে ২০ শতাংশ হারে শল্ক আরোপ করা হয়েছে কাঠ ও লোহার আসবাব এবং আসবাবের কাঁচামালে। সিকেডি অবস্থায় ব্যক্তিগত গাড়িতে ৩০ শতাংশ; পিকআপ ও ডাবল কেবিন পিকআপ ভ্যানে ২০ শতাংশ এবং গাড়ির ইঞ্জিনে ১৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক বসানো হয়েছে। এছাড়া টায়ার, রিম ইত্যাদির ওপর ৩ থেকে ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে।
এছাড়া নির্মাণসামগ্রীর কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত রড, বিলেট ইত্যাদির ওপর ৩ থেকে ১০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ হয়েছে। সিমেন্ট খাতের অন্যতম কাঁচামাল ফ্লাই অ্যাশ আমদানিতে ৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হল।
অন্যদিকে পারফিউম, চুল ও তকের যন্ত্র নেওয়ার সামগ্রী, সেভ করার সামগ্রী ইত্যাদি প্রসাধনী সামগ্রীর ওপর ২০ শতাংশ হারে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক দিতে হবে। অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, আর্গন, প্রাথমিক চিকিৎসাসামগ্রী আমদানি করতেও ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে। ফাইবার অপটিক ও বিভিন্ন ধরনের তারে ৩ থেকে ১০ শতাংশ হারে শুল্ক বসেছে।
এছাড়া আম, আপেল, তরমুজ, বাদামসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের ওপর ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসিয়ে আমদানি নিরুৎসাহিত করার এ উদ্যোগ নিল এনবিআর। পাশাপাশি চালের (হাসকড) ওপর ২৫ শতাংশ হারে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসেছে।
বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় আমদানি বাবদ প্রচুর ব্যয় হচ্ছে। দেশে ডলারের চাহিদা বেড়েছে ব্যাপকভাবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করছে। চলতি অর্থবছরে এ পর্যন্ত সাড়ে ৫০০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ অবস্থায় সরকার বিভিন্নভাবে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয় কমাতে চাচ্ছে। বিলাস পণ্যের আমদানি কমাতে এলসি মার্জিন বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সরকারের অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচিত যেসব প্রকল্পে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের বিষয় রয়েছে, সেগুলো দেরিতে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সরকারের অর্থ বিভাগ থেকে পরিপত্র জারি করে সরকারি কর্মকর্তাদের সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ স্থগিত করা হয়।