সিলেট নগরীর ঐতিহ্যবাহী সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬৪ বছর পূর্তি ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের প্রথম পুনর্মিলনী ২০২৩ উপলক্ষে মহোৎসবের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন হয়।
বৃহস্পতিবার (০২ মার্চ) সকাল থেকে প্রিয় প্রাঙ্গণে সাবেক শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হতে থাকেন এবং আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেন। বিকাল সাড়ে তিনটায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে পুরো বিদ্যালয় এলাকা হয়ে উঠে উৎসবমুখর।
শোভাযাত্রা শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রধান অতিথি হিসাবে বেলুন উড়িয়ে পুনর্মিলনীর উদ্বোধন করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
এর আগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিদের মার্চপাস্টের মাধ্যমে সম্মান জানায় বিদ্যালয়ের স্কাউট ও আমন্ত্রিত বিএনসিসি দল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মেয়র আরিফ বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান সহপাঠীদের শৈশবের ইতিকথা মনে করিয়ে দেয়। এ ধরণের আয়োজন সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গড়তে বিশেষ শিক্ষা ও উৎসাহ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সমাজসেবক হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য বড়দের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে।’
তিনি সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পুনর্মিলনীর বর্ণিল আয়োজনের প্রশংসা করেন।
সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয় পুনর্মিলনী উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, যুক্তরাজ্যের কেমডেন কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র নাজমা রহমান, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অধ্যাপক সৈয়দ মকসুদ আলী, উদযাপন পর্ষদের সদস্য সচিব সৈয়দ জুবায়ের আহমদ ও স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সালমা বেগম। এছাড়াও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ জানান, প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এ বিদ্যালয়ে পড়শোনা করা শিক্ষার্থীদের এতে অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেশ-বিদেশের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করেন। তবে উদ্বোধনী উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ৪/৫ হাজার বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী।
সৈয়দ হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রথম পুনর্মিলনী উদযাপনে বড় পরিসরে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এই উপলক্ষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। চারিদিকে বিভিন্ন স্টল। আর স্কুলের সকল প্রবেশ পথ করা হয় আলোকসজ্জা। স্কুলের সকল ভবনও আলোকসজ্জা করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে পরিবেশিত হয় বিভিন্ন শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সংস্কৃতি অনুষ্ঠান। দ্বিতীয় ও সমাপনী দিনের আয়োজনের মধ্যে রয়েছে শিক্ষক সম্মাননা, স্মৃতিচারণা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভোজ, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, র্যাফেল ড্র ও আতশবাজি।
দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা।
সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি। এদিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক শাকিল।
সামগ্রিক আয়োজন আনন্দমুখর করতে রেজিস্ট্রেশনকৃত ও প্রাক্তন সকল শিক্ষার্থীকে অংশ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে উদযাপন পর্ষদ।