‘হাওয়া’য় মুগ্ধ চিরঞ্জিত, বাংলাদেশি নাটক-সিনেমায় আগ্রহ

কলকাতার নন্দনে চলছে চতুর্থ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব। শুরু থেকেই প্রাঙ্গনের গেটে লক্ষ্য করা গেছে দর্শকের উপচে পড়া ভিড়। তবে টলিপাড়ার কোনও ছবির জন্য এই ভিড় নয়, এ ভিড় বাংলাদেশের ‘হাওয়া’ ছবির জন্য। সবাই বলছেন বাংলা ছবির ‘হাওয়া’ বদলে দিল বাংলাদেশ।

এমন কথা বলেছেন ওপার বাংলার কিংবদন্তি অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। তার ভাষ্যে, “হাওয়া তো একটা তৈরি হয়েছে বটে। বাংলাদেশের ছবি, সাউথের ছবি, হিন্দি ছবি নিয়ে হাওয়া তৈরি হয়েছে! আর আমাদের ছবি, থাক আর বললাম না!”

বাংলাদেশের নাটক, বিষয় ভাবনার উপর নির্মিত চলচ্চিত্র এককথায় মুগ্ধ করেছে ওপার বাংলার দর্শককে। সেই কারণেই নন্দনে হুড়মুড়িয়ে দর্শকের ভিড়। কলকাতার গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা চিরঞ্জিত বলেন, “সাউথের কথা বাদ। ওপার থেকে এপারে বাংলাদেশের লোকজন চলে আসছেন। তারা এখানে কাজ করতে শুরু করেছেন। চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম সকলেই চলে এসেছেন এখানে। আমরা কিন্তু ওদের ওখানে গিয়ে দাঁত ফোঁটাতে পারছি না। কিন্তু ওরা চলে আসছেন, আমরা এখানেও কিছু করতে পারছি না।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের ছবি একটা সময় সুপারডুপার হিট হত, কারণ আমরা সাধারণ মানুষের জন্য ছবি তৈরি করতাম। সেই জিনিসটাই এখন ওরা (বাংলাদেশিরা) তৈরি করছে এবং সাধারণ লোক সেটা গ্রহণ করে নিচ্ছেন। সাধারণ দর্শক যা পছন্দ করবে, শেষমেশ সেটাই তো চলবে, তাই নয় কী?”

নিয়মিত বাংলাদেশের নাটক এবং টেলিফিল্ম দেখেন জানিয়ে এই কিংবদন্তি বলেন, “আমি নিয়মিত বাংলাদেশের নাটকের দর্শক। ট্রেডমিলে এক্সারসাইজ করতে করতে বাংলাদেশের নাটক দেখি। ৪০-৪২ মিনিট হাঁটি আর সামনে একটা বাংলাদেশের নাটক চালিয়ে দিই। আমাদের এখানে তো ৪০-৪২ মিনিটের ছবিই তৈরি হয় না। ওরা সেটা তৈরি করে। ওই ফরম্যাটটা আসলে সুবিধা। তাই দেখতে দেখতে হাজার-হাজার দর্শকের মতো আমারও আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। দেখার মতো অভিনয়। পরিচালক অতনু ঘোষও বলেছেন, তারও ভাল লাগে।”

বাংলাদেশের মতো কেন দর্শক তৈরি করতে পারছে না কলকাতা? এমন প্রশ্নের উত্তরে চিরঞ্জিত বলেছেন, “আমাদের আসলে বদনাম হয়ে গিয়েছে। একবার আমরা টেলিফিল্ম তৈরি করার চেষ্টা করেছিলাম। সেটা চলেনি। টিভি চ্যানেলগুলোর ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল। তাই বন্ধ করে দিতে হয়েছে। বাংলাদেশ কিন্তু তা-ই তৈরি করছে এখন। আমাদের টেলিফিল্ম ছিল ইন্টেলেকচুয়াল, ওদের সেটা নয়। যে কোনও লোক বুঝতে পারবে। এই হল ওদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য।”