আবাসিক হলে সিট মেলে তৃতীয় বর্ষে গিয়ে

হলের তুলনায় ১২ গুণ বেশি ভাড়া, নেই পর্যাপ্ত সুবিধা

প্রতীকী ছবি

গণরুমের পরিবেশ, অতিমাত্রায় ভাড়া দিয়েও অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা, নিরাপদ খাবার পানিসহ ডাইনিং-ক্যান্টিন ও রিডিং রুমের ব্যবস্থা না থাকাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) ছাত্রী হলের অধীনস্ত হোস্টেলসমূহ। প্রশাসনের সদয় দৃষ্টির অভাবে দিনদিন নানাবিধ সমস্যা এসব হোস্টেলে প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। তবে নির্মাণাধীণ হলের কাজ শেষ হলে এ সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

হোস্টেলের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা না থাকায় মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুল ফটক, মদিনা মার্কেট, আখালিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে ৪টি হোস্টেল পরিচালনা করছে প্রশাসন। গতানুগতিক হোস্টেলের মতো জায়গা ভেদে ১৭০০-১৮০০ টাকা ভাড়া দিতে হয় শিক্ষার্থীদের। অথচ আবাসিক হলে নতুনদের ২ হাজার এবং পুরাতনদের ১৭০০টাকা এক বছরে দিতে হয়। আবাসিক হলের তুলনায় ১২ গুন বেশি নিয়ে ভাড়া নিয়েও পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত না করে নানা নিয়মের বেড়াজালে শিক্ষার্থীদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জিম্মি করে রেখেছে বলে অভিযোগ একাধিক শিক্ষার্থীর।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ছাত্রীরা নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অতিমাত্রায় ভাড়া দিয়ে থাকেন এসব হোস্টেলে। এসব হোস্টেলে ১ম ও ২য় বর্ষে না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আবাসিক হলে সিট মিলে না। এ কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে এসব হোস্টেলে উঠেন, যা এক প্রকার জিম্মি। কিন্তু একই পরিমান টাকা দিয়ে বাইরের হোস্টেলে শিক্ষার্থীরা অনায়াসে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন তারা।

হোস্টেলের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, হলে চেয়ার-টেবিল-খাট ও লকারের ব্যবস্থা থাকলেও হোস্টেলে কিছুই নেই। ২ জনের রুমে ৪ থেকে ৬ জনকে রাখে, যা একধরণের গণরুমের পরিবেশ। বেশি টাকা দিয়েও গাদাগাদি করে থাকতে হয় এসব হোস্টেলে। ডাইনিং-ক্যান্টিনের সুবিধাও নেই। নেই রিডিংরুম ও ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা। গাদাগাদি করে থেকে বেশিরভাগ সময় বিছানায়, ব্যালকনি ও সিড়িতে বসে পড়াশোনা করতে হয়। তারপরও হলে সিটের আশায় এভাবে কষ্ট করে থাকছেন ছাত্রীরা।

সমস্যাসমূহ সমাধানের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথম ছাত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমিন ও বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট জোবেদা কনক খান বলেন, ছাত্রীদের ক্যাম্পাসের বাইরে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোন বরাদ্দ নেই। নিরাপত্তার কথা ভেবে শিক্ষার্থীদের থেকে ভাড়া নিয়েই চালাতে হচ্ছে এসব হোস্টেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন হলের কাজ শেষ হলে এসব সমস্যা আর থাকবে না বলে জানান তারা।

সার্বিক বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলে কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি। তবে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ইউজিসি থেকে অনুমতি না থাকায় হোস্টেলগুলোতে কোনো ধরণের বরাদ্দ দেয়া হয় না। বর্তমানে ছাত্রীদের  জন্য একটি হল নির্মাণাধীন রয়েছে। হলটি উদ্বোধন হলে অধিকাংশ ছাত্রী হলে থাকতে পারবে। আশা করছি, তখন আর এ সমস্যা থাকবে না।’