হবিগঞ্জে ঢালাইয়ের কাজে রড দেয়নি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠিকাদার। এ অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ২২ লাখ টাকায় হবিগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেরামত কাজ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই টাইলসগুলো ভেঙে যায়।
দ্বিতীয় দফার মেরামতেও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, অভিযোগ পাওয়া গেছে এ দপ্তরের মাধ্যমে আরও বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজেও।
জানা যায়, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে প্রথমবার ২৪০ বর্গফুট জায়গায় নিম্নমানের টাইলস লাগানো হলেও পুরো জায়গায় দ্বিতীয় দফায় মেরামত করা হয়নি। কাজ করা হয়েছে অল্প কিছু জায়গায়। সেখানে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোনো প্রতিনিধিকে উপস্থিত পাওয়া যায়নি।
কর্মরতরা বলেন, অফিস থেকে আমাদের যেভাবে কাজের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, আমরা সেই মোতাবেক কাজ করেছি। ২০২১-২২ অর্থ বছরে এ স্বাস্থ্য কেন্দ্র মেরামতে ২২ লাখ টাকার পরিকল্পনা নেয় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হবিগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রথমবার মেরামত কাজ হওয়ার পর অনিয়ম ধরা পড়লে দ্বিতীয়বার মেরামত করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্বিতীয় দফার কাজেও তারা অনিয়ম করেছে। নামেমাত্র মেরামত করেই কর্মরত লোকজন চলে যান।
জেলার আরও কয়েকটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র মেরামতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এ দপ্তরটির নিয়োজিত ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে। এগুলোর কক্ষতে ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত টাইলস বসানোর কথা। কিন্তু আগের লাগানো টাইলসের উপরে দুইটি করে টাইলস বসিয়েই তারা বিল তৈরী করে ফেলেছেন। প্রতিষ্ঠানগুলোতে মেরামতের অনেক কাজ বাকি থাকায় সংশ্লিষ্টরা অসন্তুষ্ট। মাধবপুর উপজেলার আদাঐর, বানিয়াচংয়েরর খাগাউড়া ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলার লোকড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডেলিভারী কক্ষসহ বিভিন্ন স্থানে এসব চিত্র দেখা যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আদাঐরসহ একাধিক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পুরো বিল্ডিংয়ে রঙয়ের কাজ না করে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা বিল উত্তোলন করেছে তারা। বানিয়াচংয়ের খাড়াউড়া ও পুকড়ায় বিদ্যুৎ লাইন মেরামত না করায় সেবায় বিঘ্ন ঘটছে সেখানে।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের ভিতরে সাব মার্জেবল রাস্তা তৈরি হয়েছে। সেখানে ঢালাইয়ে কোন ধরণের রড ব্যবহার করা হয়নি। এজন্য কাজ শেষ হওয়ার প্রায় ৬ মাসের মধ্যেই এ রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হবিগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম পাঠান বলেন, আমরা ইতিমধ্যে যে কয়টি জায়গায় অভিযোগ পেয়েছি, সেগুলোতে পুনরায় কাজ করিয়েছি। বাকিগুলোতে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ে আমাদের লোকবল স্বল্পতা রয়েছে।