হবিগঞ্জে আবাদ করা ভূমি বন্দোবস্ত বাতিল চায় সমবায় সমিতি

‘শ্রীমঙ্গল টি এস্টেট’কে দেয়া ৩৮৮ একর সরকারি খাস ভূমি থেকে প্রায় ৫৫ একর ভূমির বন্দোবস্ত আদেশ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সাতাইহাল বহুমুখী সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ। শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন আহমদ (বীর প্রতিক)। এসময় উপস্থিত ছিলেন সমিতির সদস্য ইসমাইল মিয়া, তফিল মিয়া ও আব্দুল হাইয়িদ।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ‘উক্ত বন্দোবস্ত ভূমির মধ্যে ৫৫ একর ভূমিতে নবীগঞ্জ উপজেলার সাতাইহাল পূর্বপাড়া বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্যরা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যৌথ অংশীদারী চুক্তিতে গবাদি পশু, হাঁস মুরগী পালন, মৎস্য চাষ, কাসাবা, লিচু, কাঁঠাল, মাল্টা, লেবু, কাজু বাদাম, কপি ও আনারসসহ বিভিন্ন অর্থকরী ফসল চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ২০০১ সাল থেকে জেলা প্রশাসনের নিকট উক্ত ভূমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য আবেদন করে আসলেও এ ব্যাপারে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।’

এতে আরো বলা হয়, ‘স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় ২০১১ সালে সমিতির পক্ষ থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। ২০২০ সালে ভূমি সচিব এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রশাসন এতে কর্ণপাত করেনি। উপরন্তু ২০২৩ এসে সমবায় সমিতিভূক্ত দুই শতাধিক পরিবারের জীবিকার অবলম্বন ৫৫ একর ভূমি চা বাগানকে দেয়া বন্দোবস্ত ভূমির সাথে অন্তর্ভুক্ত করেছে।’

সংবাদ সম্মেলন আরও অভিযোগ করা হয় যে, বন্দোবস্তপ্রাপ্ত কোম্পানি ইতোমধ্যে চা উৎপাদনে সক্ষমতা হারিয়েছে বলে চিহ্নিত হয়েছে। তারা দেশের একটি প্রভাবশালী আবাসন কোম্পানির সাথে গোপনে চুক্তিবদ্ধ হয়ে চা চাষের নামে বিপুল পরিমাণ সরকারি ভূমি বন্দোবস্ত নিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এখানে কোন চা চাষ হবে না। অন্য কোন বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার ফন্দি করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় তারা তাদের চাষাবাদ করা ভূমি বন্দোবস্ত থেকে বাদ দেয়ার জোর দাবি জানান।

নেতৃবৃন্দরা জানান, রুটি-রুজির একমাত্র অবলম্বন উক্ত ভূমির দখল তারা ছাড়বেন না। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করবেন। এক্ষেত্রে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় প্রশাসন দায়ী করেছেন তারা।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসন ১০ বছর (২০২৩- ২০৩৩ সন) মেয়াদে চা চাষের জন্য ৩৮৮.৯৬ একর ভূমিটি শ্রীমঙ্গল   টি এস্টেটকে বন্দোবস্ত প্রদান করেছে।