‘স্মৃতিতে শ্রুতিতে বঙ্গবন্ধু ও অন্যরা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। প্রয়োজন ব্যাপক লেখালেখির। যাতে নতুন প্রজন্ম ২১ বছরের বিকৃতির বেড়াজাল থেকে বের হয়ে জাতির পিতাকে সঠিকভাবে জানতে পারে, চিনতে পারে। তাহলে তারা জাতির যোগ্য উত্তরসূরি হয়ে উঠতে পারবে।

একই সঙ্গে, বঙ্গবন্ধুকে কাছে থেকে যারা দেখেছেন তাদেরকে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই বাঙালি সম্পর্কে তাদের স্মৃতিকথা লেখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা এ দায়িত্ব পালন করলে নতুন প্রজন্মের জন্যে অনেক বড় একটি কাজ হবে।

মুুহিবুর রহমান মানিক শনিবার রাতে মহানগরীর পূর্ব জিন্দাবাজারে একটি অভিজাত হোটেলে মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার, সিলেট আয়োজিত লেখক শেখ নূরুল ইসলাম রচিত ‘স্মৃতিতে শ্রুতিতে বঙ্গবন্ধু ও অন্যরা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো মহাপুরুষের আবির্ভাব হয়েছিল বলেই বাঙালি জাতি হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্ত হয়। এরপর তিনি যখন তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলছিলেন তখনই স্বাধীনতাবিরোধীরা তাকে সপরিবারে হত্যা করে।

মুহিবুর রহমান মানিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার পথে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। এর ধারাবাহিকতা রক্ষার বিকল্প নেই। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্ব অব্যাহত রাখার পক্ষে জাতিকে সিদ্ধান্ত দিতে হবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় ধারাবাহিকতার ফলেই দেশ দুটি বিশ্বে দ্রুত উন্নয়নের উদাহরণ হয়ে উঠে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কেবল রণাঙ্গনে সীমাবদ্ধ নয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসরদের মুখোশ উন্মোচন এবং অপকর্মের কথাও তুলে ধরতে হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম শত্রু-মিত্র চিনতে পারে। তিনি পাকিস্তানি ভাবধারায় বিশ্বাসীদের থাবা থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষক আল আজাদ।

তিনি বলেন, শেখ নূরুল ইসলামের দেখা ও শোনা থেকে এ বইয়ে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, জননেতা আব্দুল হক, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আব্দুল হাই ও বর্তমান সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক সম্পর্কে তথ্যবহুল স্মৃতিকথা উঠে এসেছে।

অনুষ্ঠানে সভপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার, সিলেটের সহ সভাপতি মাহবুবুল আলম মিলন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ চৌধুরী ও সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাস্টার আওলাদ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার, সিলেটের সহসাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া।

শেখ নূরুল ইসলামের প্রকাশিত বইগুলো নিয়ে আলোচনা করেন, মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার, সিলেটের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আব্দুল জলিল।

মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার, সিলেটের সাহিত্য সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফৌজিয়া আক্তারের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ছাতক উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আফজাল হোসেন ও রফিকুল ইসলাম কিরণ, ভাতগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি গৌছ উদ্দিন খান, সাবেক সহ সভাপতি দবিরুল ইসলাম দবির, সুনামগঞ্জ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দিলওয়ার হোসেন বাবর, সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট সাহাব উদ্দিন ও সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি এম রশীদ আহমদ।

লেখক পরিচিতি তুলে ধরেন, মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার, সিলেটের প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক সুবর্ণা হামিদ।

অনুষ্ঠানে লেখক শেখ নূরুল ইসলাম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, লেখালেখি তার শখ। তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লিখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এ দুটি বিষয় তাকে সবসময় লিখতে তাগিদ দেয়।