স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘স্মরণকালের সর্ববৃহৎ ছাত্র সমাবেশ’ করবে সংগঠনটি।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৬ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সংগঠনটি।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতসহ কেন্দ্রীয় ও বিভিন্ন শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এতে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সমাবেশে সারাদেশ থেকে পাঁচ লক্ষাধিক নেতা-কর্মী এবং দুই লাখের বেশি সাধারণ শিক্ষার্থী অংশ নেবেন বলে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে।
ছাত্রলীগে পঞ্চাশ লাখ নেতা-কর্মী আছে বলা হলেও সমাবেশে উপস্থিতির টার্গেট পাঁচ লাখ কেন- এমন প্রশ্নে সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘ছাত্রলীগ বৃহত্তর পরিবার। রাজনৈতিক সমাবেশে গোটা দেশের পুরো শক্তিকে জমায়েত করা রাজনৈতিক ব্যাকরণ নয়। রিফ্লেকশন ঘটানো বা সিম্বলিক হিসেবে আমরা ছাত্র সমাবেশটি করছি।’
বুয়েটে ছাত্ররাজনীতির পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সাদ্দাম বলেন, ‘বুয়েটের অভ্যন্তরে সাংগঠনিক রাজনৈতিক কাঠামো কেমন হবে, সেটির ব্যাপারে বুয়েটের শিক্ষার্থীদের মতামতকে আমরা শ্রদ্ধা করি৷ একইসঙ্গে এটিও বলছি যে, রাজনীতি করা ব্যক্তির সাংবিধানিক অধিকার। তারা যে আন্দোলন করেছে, সে আন্দোলনের নৈতিক শক্তি রয়েছে। আমরা সেটিকে সম্মান করি৷ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে যদি আমাদের ছাত্ররাজনীতিতে কিছু পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনা করতে হয়, সেটি আমরা অ্যাডজাস্ট করে নেব।’
এর আগে লিখিত বক্তব্যে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন জানান, শোকের মাস আগস্টে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিবছর আলোচনা সভার আয়োজন করলেও এ বছর ছাত্র সমাবেশের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্মরণকালের সর্ববৃহৎ এই ছাত্রসমাবেশ সফল করতে ছাত্রলীগের সর্বাত্মক প্রস্তুতি চলমান। এ লক্ষ্যে গত ১০ আগস্ট ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের প্রস্তুতি সভা ও ১৮ আগস্ট বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সারাদেশ থেকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাতে অংশ নেন।
তিনি আরও জানান, ছাত্রলীগ ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে ১২৮টি সমন্বয় টিম গঠন করেছে। তাদের মাধ্যমে সারাদেশ থেকে শিক্ষার্থী বন্ধুদের সুশৃঙ্খলভাবে ছাত্র সমাবেশে স্বাগত জানানো হবে। ছাত্র সমাবেশ সফল করতে একইসঙ্গে দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রামে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা দিনরাত প্রচার চালাচ্ছে।’
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা বাংলার ছাত্রসমাজ আজ স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নে বিভোর। ১ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু-কন্যা স্মার্ট সেই তারুণ্যকে নিয়ে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক দেবেন। আর সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ছাত্রলীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে।’
সেরা ইউনিট পাবে পুরস্কার :
সমাবেশে আসা ইউনিটগুলোর মধ্যে সেরা ইউনিটকে দেয়া হবে পুরস্কার। কোনো ইউনিট উপযুক্ত অংশগ্রহণ প্রমাণে ব্যর্থ হলে সেই ইউনিটকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হবে বলেও জানানো হয়।
সেরা ইউনিট নির্ণয়ের মাপকাঠি কী হবে জানতে চাইলে সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে যারা নিয়ে আসতে পারবে, যারা অনেক বেশি অর্গানাইজড এবং ডিসিপ্লিন মেইনটেইন করবে, যাদের সিম্বলিক রিপ্লেকশনটি আরও বেশি সমৃদ্ধ ও সুন্দর হবে তাদেরকেই আমরা সেরা ইউনিট হিসেবে বাছাই করবো। মূলত এখানে সংখ্যাটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি তারা কতটা দূর থেকে আসবে এবং কতটা সুশৃঙ্খল থাকবে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। সার্বিক দিক বিবেচনা করে সেরা ইউনিট হিসেবে বাছাই করা হবে।’