স্বশিক্ষিত বাবুল, স্নাতক আনোয়ারুজ্জামান ও মাহমুদুল এল.এল.বি

সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে মঙ্গলবার (২৩ মে) ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। এই শেষ দিন পর্যন্ত মেয়র প্রার্থী মোট ১১ জন মেয়র পদে তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

এর মধ্যে দলীয় প্রতীকের প্রার্থী ৪ জন এবং বাকি ৭ জন স্বতন্ত্র থেকে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।

দলীয় চার প্রার্থী হলেন, মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (আওয়ামী লীগ), নজরুল ইসলাম বাবুল (জাতীয় পার্টি), হাফেজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (ইসলামী আন্দোলন) ও মো. জহিরুল আলম (জাকের পার্টি)।

এছাড়া স্বতন্ত্র ৭ মেয়র প্রার্থী হলেন, মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী, মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।

নির্বাচন কমিশন সিলেট আঞ্চলিক অফিসে দাখিল করা মনোনয়নপত্রে চারটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনী হলফনামায় সবাই নিজেদের ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছেন। আর শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসান।

এর মধ্যে মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী স্নাতক ডিগ্রিধারী এবং মাহমুদুল হাসান এল.এল.বি ডিগ্রিধারী। হলফনামায় জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম (বাবুল) নিজেকে ‘স্বশিক্ষিত’ বলে দাবি করেছেন।

নির্বাচন কমিশনে (ইসি) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রার্থীর ব্যক্তিগত তথ্যের পাশাপাশি তাদের আয়, আয়ের উৎস, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা, মামলা, দেনাসহ বেশ কিছু তথ্য দিতে হয়।

তিনজন প্রার্থীই নিজেদের ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিয়েছেন। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোন ফৌজদারি মামলা না থাকলেও অপর দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা ছিল এবং এখনো আছে।

হলফনামায় আনোয়ারুজ্জামান উল্লেখ করেন, তার কাছে নগদ ৪১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৮৪৮ টাকা রয়েছে। এছাড়া সম্পদ-সপ্তত্তির মধ্যে ২টি টিভি, ১টি ফ্রিজ, ২টি এসি, ৪৭ ভরি স্বর্ণ, ২ সেট সোফা, ৪টি খাট, ১টি টেবিল, ১০টি চেয়ার, ২টি আলমিরা রয়েছে। এছাড়া ৩ বিঘা কৃষিজমি, ২৩ শতক অকৃষি জমি, ১টি দালান ও ১টি এপার্টমেন্ট রয়েছে।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটা মামলা তদন্তাধীন। এ ছাড়া অতীতে তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হলেও সেগুলো থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।

হলফনামায় নজরুল ইসলামের উল্লেখ করেন, তার কাছে নগদ ৫২ লক্ষ ৮৯ হাজার ১১০ টাকা এবং ব্যংকে রয়েছে ৫৬ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫৮৯ টাকা রয়েছে। এছাড়া ১৫টি যানবাহন, ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকার স্বর্ণ এবং ২ লক্ষ টাকার আসবারপত্র সহ কৃষিজমি, অকৃষি জমি, দালান ও এপার্টমেন্টের বিবরণ দেন তিনি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে বর্তমানে কোন মামলা না থাকলেও অতীতে তার বিরুদ্ধে একটা মামলা ছিল এবং সেই মামলায় তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।

হলফনামায় মাহমুদুল হাসান উল্লেখ করেন, তার কাছে নগদ ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা এবং ব্যংকে রয়েছে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা রয়েছে। এছাড়া একটি মোটর সাইকেল ও আসবাবপত্রের বিবরণ দেন তিনি।

বিএনপিদলীয় মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় মূলত এই তিনজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন সবাই।

ইভিএমের মাধ্যমে আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিত হবে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। মঙ্গলবার (২৩ মে) ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে আগামীকাল ২৫ মে। আর ১ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।

প্রসঙ্গত, সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই মহানগরীর ওয়ার্ড ৪২টি।

মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ ও নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ জন। মোট কেন্দ্র ১৯০টি এবং ভোটকক্ষ ১হাজার ৩৬৪টি।