ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ আন্তর্জাতিক মেরিটাইম বাণিজ্যিক হাব বার্সেলোনা পোর্ট এবং চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরের মধ্যে বহুমুখী প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ। বার্সেলোনা পোর্টের বিভিন্ন অবকাঠামো ও স্থাপনা পরিদর্শন করছেন স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বার্সেলোনা পোর্ট কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট লুইস সালভাদোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠককালে স্পেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সারওয়ার মাহমুদ এ বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন দূতাবাসের কাউন্সেলর (বাণিজ্যিক) রেদোয়ান আহমেদ ও কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) ইমাদুল হক।
বৈঠকে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরগুলোর সঙ্গে বার্সেলোনা পোর্টের সরাসরি শিপিং সংযোগ স্থাপন, বন্দর ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন, লজিস্টিকস সুবিধা সম্প্রসারণ, পোর্ট কমিউনিটি নেটওয়ার্কিং, উদ্ভাবনী ধারণা ও বিকাশমান প্রযুক্তির প্রয়োগ, সাইবার নিরাপত্তা, পারস্পরিক অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ বিনিময়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাব্যতার বিষয়টি উঠে আসে।
দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার মাধ্যমে এগিয়ে নেয়ার এই ধারণাকে স্বাগত জানিয়ে বার্সেলোনা পোর্ট এক্ষেত্রে অত্যন্ত ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে।
বৈঠককালে বার্সেলোনা পোর্টের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সম্প্রসারণ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ম্যানুয়েল গালান পোর্টের বিভিন্ন স্থাপনা ও উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতকে বিস্তারিত ব্রিফ করেন। তিনি জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বার্সেলোনা পোর্টে আসা রফতানি কন্টেইনারের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি গন্তব্য স্পেন। এছাড়া, এশিয়ায় স্পেনের চতুর্থ বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার বাংলাদেশ। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বার্সেলোনা পোর্টের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরসমূহের সরাসরি শিপিং লিংক স্থাপিত হলে তা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং পরিবহন ব্যয় ও সময় হ্রাসের ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী অবদান রাখবে।’
ম্যানুয়েল গালান বার্সেলোনা পোর্টকে একটি স্মার্ট পোর্টে রূপান্তরের পরিকল্পনার বিষয়টি উল্লেখ করলে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে চলেছি, যার অন্যতম অনুষঙ্গ হিসেবে চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের সর্বোচ্চ উপযোগ ও সক্ষমতাকে ব্যবহার করে দেশকে সমগ্র দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক প্রবেশদ্বারে পরিণত করার প্রয়াস চলমান রয়েছে।’