নিজেদের প্রথম ম্যাচেই কোস্টারিকাকে উড়িয়ে বিশ্বকাপ মিশনের শুভ সূচনা করল স্পেন। বুধবার রাতে কাতারের আল থুমামা স্টেডিয়ামে কোস্টারিকাকে ৭-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে লুই এনরিকের শিষ্যরা।
কোস্টারিকাকে গোলবন্যায় ভাসানোর দিনে স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছেন স্পেনের ৬ ফুটবলার। বার্সেলোনা স্ট্রাইকার ফেররান তোরেস জালের দেখা পেয়েছেন দুইবার, বাকি পাঁচজন জালে বল ছুইয়েছেন একবার করে।
প্রথমার্ধেই ৩ গোলের লিড নিয়ে পেদ্রি-তোরেসরা দ্বিতীয়ার্ধে কোস্টারিকার জালে দেয় আরও ৪ গোল। আর তাতেই লস টিকোদের গোলবন্যায় ভাসিয়ে উড়ন্ত জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হলো স্প্যানিশদের। বিশ্বকাপে এটিই স্পেনের সবচেয়ে বড় জয়।
এর আগে ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে ডেনমার্ককে ৫-১ গোলে হারিয়েছিল তারা। আর ১৯৯৮ সালে বুলগেরিয়াকে ৬-১ গোলে। কোস্টারিকাকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে নিজেদের রেকর্ড নিজেরাই ভাঙল লা ফুরিয়া রোহা।
২০১০ সালে অভিজ্ঞ বার্সেলোনার তারকাদের নিয়ে বিশ্বকাপে বাজিমাত করেছিল স্পেন। পরের দুই আসরে হতাশা ছাড়া আর কিছুই আনতে পারেনি তারা। তাই কাতার বিশ্বকাপের আগে তরুণদের পাশাপাশি অভিজ্ঞদের নিয়ে বাজি ধরে দল সাজান কোচ লুইস এনরিকে। আর প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত হল তার ফর্মুলায়।
প্রতিপক্ষ হিসেবে কোস্টারিকাকে দুর্বল যদি বলা হয় তাহলে সেটি হবে ভুল। ম্যাচের একটি মুহূর্তেও নিজেদের শক্তিশালী প্রমাণ করতে পারেনি তারা। ম্যাচের শুরু থেকেই স্প্যানিশদের আক্রমণে রীতিমতো ছিল তারা দিশেহারা।
কোস্টারিকার জালে প্রথম আঘাত হানেন দানি ওলমো। শুরু থেকেই কোস্টারিকার উপর আক্রমণের চাপ বাড়িয়ে তোলার ফল হিসেবে ম্যাচের ১১ মিনিটেই এগিয়ে যায় স্পেন।
ডি বক্সের বাইরে থেকে বাড়িয়ে দেয়া বল পেয়ে গোলমুখে শট হাঁকান ওলমো। সেই শট কোস্টারিকার গোলরক্ষক কাইলর নাভাসকে এড়িয়ে খুঁজে নেয় জালের ঠিকানা। আর এই গোলের মাধ্যমে দলীয় শততম গোল পূর্ণ হয় স্পেনের।
এগিয়ে গিয়ে আক্রমণের ধার আরও বেড়ে যায় স্পেনের। আর তাতে করে ১০ মিনিটের মাথায় ব্যবধান হয় দ্বিগুণ। এবারে দল এগিয়ে যায় মার্কো আসেনসিওর কল্যাণে।
বাঁ দিক থেকে গোলমুখে নেয়া মার্কোর শট কোনভাবেই ঠেকানো সম্ভব হয়নি অভিজ্ঞ নাভাসের পক্ষে। যার ফলে লিড বেড়ে যার ২১তম মিনিটে।
স্পেনের খেলা দেখে একটা সময় মনেই হচ্ছিল একটি নির্দিষ্ট চক্র মেনে তারা গোল করে যাচ্ছেন। কেননা তৃতীয় গোলের দেখা মেলে তাদের দ্বিতীয় গোল করার ১০ মিনিটের মাথায়।
ম্যাচের ২৯ তম মিনিটে নিজেদের ডি বক্সের ভেতর স্প্যানিশ ডিফেন্ডার জোর্দি আলবাকে ফাউল করে বসেন কোস্টারিকার ডিফেন্ডার ওস্কার ডুয়ার্তে। আর তাতে করে পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি রেফারি। ৩১তম মিনিটে সফল স্পট কিকে ব্যবধান ৩-০তে নিয়ে যান ফেরান তোরেস। এরপর প্রথমার্ধের বাকিটা সময় আক্রমণ চালালেও গোল বের করে আনা সম্ভব হয়নি স্প্যানিশদের। ৩ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যেতে হয় তাদের।
দ্বিতীয়ার্ধে নতুন উদ্যমে প্রতিপক্ষের ওপর চড়াও হয় স্প্যানিশরা। ৫৪ তম মিনিটে প্রতিপক্ষের জালে ফের আঘাত হানেন তোরেস। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে নিজের ১৫তম গোলের মাধ্যমে স্কোরবোর্ড করেন ৪-০।
৫৫ থেকে ৭৩। এই ১৮ মিনিট থেমে ছিল স্পেনের গোল উৎসব। ৭৪ মিনিটের মাথায় তারা ফের শুরু করে তাণ্ডব।
ডি বক্সের ভেতর থেকে দুর্দান্ত এক ভলিতে ব্যবধান ৫-০ করেন গাভি। ৯০তম মিনিটে স্কোরলাইন ৬-০ হয় মিডফিল্ডার কার্লোস সোলারের সুবাদে। আর যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে কোস্টারিকার কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিয়ে নিজেদের রেকর্ড ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন আলভারো মোরাতা।