ভারতের করা রানপাহাড়ের নিচ থেকে উঠেই দাঁড়াতে পারলো না পাকিস্তান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের দেওয়া ৩৫৭ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ১১৮ রানে অলআউট হয়ে গেছে বাবররা। আর তাতে ২২৮ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে পাকিস্তান। দুই দলের মধ্যকার লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হারের রেকর্ডও এটি।
এশিয়া কাপের আগে যেন উড়ছিল পাকিস্তান। বাইশগজে ব্যাট-বলে রাজত্বে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে শীর্ষস্থান দখল নিয়েছিল বাবর আজম এন্ড কোং। এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়েও অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছিল ম্যান ইন গ্রিনদের। অথচ সব বিভাগে ধারাবাহিক দলটারই ভরাডুবি!
গ্রুপপর্বে ভারত ছিল কিছুটা কোণঠাসা। মনে হচ্ছিল, বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়া তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। সুপার ফোরপর্বে ঠিক যেন উল্টো চিত্র। বৃষ্টিবাধায় পড়া ম্যাচটি রিজার্ভ ডেতে গড়ালেও পাকিস্তানি সমর্থকরা হয়তো খুব করে চাইছিলেন, বৃষ্টি খেলাটা পণ্ড করে দিক।
ভারতের ইনিংস শেষ হতেই যে কার্যত ম্যাচটা পাকিস্তানের হাতছাড়া হয়ে যায়। এরপর ব্যাটাররা বাজে শুরু করলে বৃষ্টিই ছিল পাকিস্তানের শেষ ভরসা। কিন্তু বৃষ্টিবাধায় পড়লেও শেষপর্যন্ত ম্যাচে কোনো ওভার কাটা যায়নি।
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ভারতের ছুড়ে দেওয়া ৩৫৭ রানের পাহাড়সমান লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান ৩২ ওভারে অলআউট হয়ে গেছে ১২৮ রানেই। এতে বিশাল জয় পায় ভারত।
রান তাড়ায় শুরু থেকেই কোণঠাসা ছিল পাকিস্তান। ইমাম উল হক ৯ আর বাবর আজম ১০ রান করে সাজঘরে ফিরে যান। পাকিস্তান ২ উইকেটে ৪৪ রান করার পর নামে বৃষ্টি।
প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর শুরু হয় খেলা। বৃষ্টির পর খেলা শুরু হতেই আউট হন মোহাম্মদ রিজওয়ানও (২)। ১২তম ওভারে মাত্র ৪৭ রান তুলতে ৩ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে পাকিস্তান।
ফাখর জামান যে টেস্ট খেলছিলেন। তারপরও রক্ষা হয়নি। ৫০ বলে ২৭ রান করে কুলদীপ যাদবের শিকার হন পাকিস্তানি এই ওপেনার। এরপর ভয়ংকর হয়ে উঠেন কুলদীপ।
বাঁহাতি এই স্পিনার আঘা সালমান (২৩), শাদাব খান (৬), ইফতিখার আহমেদকে (২৩)। ১১৯ রানে ৭ উইকেট হারানো পাকিস্তান ৩২ ওভারেই গুটিয়ে যায় ১২৮ রানে। ভারতের স্পিনার কুলদীপ যাদব ২৫ রান খরচায় একাই নেন ৫টি উইকেট।
এর আগে বিরাট কোহলি আর লোকেশ রাহুলের জোড়া সেঞ্চুরিতে ভারত ২ উইকেটেই দাঁড় করিয়েছিল ৩৫৬ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ।
আগের দিন টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমেছিল ভারত। কিন্তু ২৪.১ ওভারে তারা ১৪৭ রান তোলার পর বৃষ্টির কারণে ম্যাচ বন্ধ হয়ে যায়। আম্পায়াররা অনেকটা সময় অপেক্ষার পরও খেলা শুরু করা না গেলে ম্যাচ গড়ায় রিজার্ভ ডেতে।
রিজার্ভ ডেতেও ভেজা আউটফিল্ডের কারণে সময়মতো খেলা শুরু করা যায়নি। প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা পর মাঠ প্রস্তুত হয়। আগের দিন রোহিত শর্মা ৫৬ আর শুভমান গিল ৫৮ রানে আউট হয়েছিলেন।
কিন্তু ২৪.১ ওভারে ১৪৭ রান নিয়ে মাঠে নামা ভারত আজ আর কোনো উইকেট হারায়নি। লোকেশ রাহুল ১০০ বলে আর বিরাট কোহলি ৮৪ বলে করেন সেঞ্চুরি।
১৯৪ বলের জুটিতে তারা ২৩৩ রানে অবিচ্ছিন্ন থাকেন। ৯৪ বলে ৯ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় ১২২ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৭তম সেঞ্চুরি।
অন্যদিকে ১০৬ বলে ১২ চার আর ২ ছক্কায় ১১১ রানে অপরাজিত থাকা লোকেশ রাহুলের ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি এটি।