দেশের বাজারে সোনার দাম আবারও বাড়ানো হয়েছে। ১ হাজার ৮৪ টাকা বাড়িয়ে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৪ টাকা। এতে এই মানের এক ভরি সোনার অলংকার কিনতে ক্রেতাদের ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৯৪ টাকা গুনতে হবে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। সোমবার (২০ মে) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
এর আগে ১৯, ১২, ৮, ৬ ও ৫ মে পাঁচ দাফায় সোনার দাম বাড়ানো হয়। ১৯ মে প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১৭৮ টাকা, ১২ মে ১ হাজার ৮৩২ টাকা, ৮ মে ৪ হাজার ৫০২ টাকা, ৬ মে ৭৩৫ টাকা এবং ৫ মে প্রতি ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়ানো হয়। এখন আবার দাম বাড়ানোর ফলে ছয় দফায় ভরিতে সোনার দাম বাড়লো ১০ হাজার ৩৮১ টাকা।
এ দাম বাড়ার আগে আট দফায় সোনার দাম ভরিতে ১০ হাজার ২৬২ টাকা কমানো হয়। এর মধ্যে ৩ মে ১ হাজার ৮৭৮ টাকা, ৩০ এপ্রিল ৪২০ টাকা, ২৯ এপ্রিল ১ হাজার ১১৫ টাকা, ২৮ এপ্রিল ৩১৫ টাকা, ২৭ এপ্রিল ৬৩০ টাকা, ২৫ এপ্রিল ৬৩০ টাকা, ২৪ এপ্রিল ২ হাজার ৯৯ টাকা এবং ২৩ এপ্রিল ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমানো হয়।
আট দফা দাম কমার পর এখন ছয় দফায় সোনার দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে বাজুস বলছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাজুস সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করেছে, যা সোমবার (২০ মে) থেকে কার্যকর হবে।
রোববার (১৯ মে) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে নতুন করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৮৪ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৪ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ২৭ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ১০৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৮৮৭ টাকা বাড়িয়ে ৯৭ হাজার ৮০৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৭৩৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ হাজার ৮৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অবশ্য সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের এর থেকে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে সোনার গহনা বিক্রি করা হয়। সেই সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হবে ন্যূনতম ৬ শতাংশ। ফলে আগামীকাল থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার গহনা কিনতে ক্রেতাদের ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৯৪ টাকা গুনতে হবে। এতো দামে এর আগে দেশের বাজারে সোনার অলংকার বিক্রি হয়নি।
সোনার অলংকারের দামে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হলেও, দেশের বাজারে সোনার দাম এর থেকেও বেশি ছিল। দেশের ইতিহাসে এক ভরি সোনা সর্বোচ্চ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা থেকে ২০ এপ্রিল বিকেল ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত এই দামে সোনা বিক্রি হয়। সে সময় এক ভরি সোনার অলংকারের সর্বনিম্ন দাম নির্ধারিত হয় ১ লাখ ২৯ হাজার ১১৯ টাকা।
সোনার দামে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি না হলেও, সোনার অলংকারের দামে সর্বোচ্চ রেকর্ড সৃষ্টি হওয়ার কারণ মজুরি। আগে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হতো ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। কিন্তু এই নিয়ম পরিবর্তন করে গত ১৪ মে ভরি প্রতি ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ শতাংশ। এতেই নতুন দামে সোনার অলংকারের ক্ষেত্রে ভরি প্রতি ন্যূনতম মজুরি দিতে হবে ৭ হাজার ১৭৩ টাকা।
এদিকে ১৯ মে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১৭৮ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৮ হাজার ৪৬০ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১৩১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৩ হাজার ৮২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৯৫৬ টাকা বাড়িয়ে ৯৬ হাজার ৯১৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ৭৯৩ টাকা বাড়িয়ে ৮০ হাজার ১৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়।। আজ রোববার পর্যন্ত এই দামেই সোনা বিক্রি হবে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।