‘সেভ সিলেট’র সহায়তায় স্কুলে ফিরল সুবিধাবঞ্চিত শিশু

সুনামগঞ্জের সুবিদবাজার বোনের বাসায় থেকে হোটেলে কাজ করে ১১ বছরের মোহাম্মদ আবু সালেহ। ডাক নাম সালেক। তার স্কুলে যাওয়ার দারুণ গল্পটি জানতে একটু পেছনে ফিরতে হবে। তবে সালেকের স্কুলে ভর্তি হওয়ার পেছনে অন্যতম অবদান যে মানুষটার তিনি ফটোগ্রাফিক দুনিয়ার আইকন প্রীত রেজা।

প্রীত রেজা নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি পোস্ট করেন, এয়ারপোর্ট থেকে বেড়িয়েই নাস্তার জন্য একটা হোটেলে দাঁড়ালাম। দেখা হলো সালেকের সঙ্গে। কি অদ্ভুত সুন্দর মিষ্টি হাসি, খুব মায়া মায়া চেহারা। হোটেলের সাপোর্ট স্টাফ। খুব যত্ন করে নিজের কাজটা করছিল। ভাবছিলাম আজ স্কুল বন্ধের দিন বলে হয়তো হোটেলে এসেছে সে, অন্য কোনো কর্মচারীর ছোট ভাই বা ছেলে, বসে না থেকে কাজ করছে হয়তোবা! তবে মনটাই খারাপ হয়ে গেল এটা জেনে যে, সালেক স্কুলে যায় না! এই হোটেলে ফুল টাইম কাজ করে সে। এত সামান্য কারনে মন খারাপ গেল আমার। সব কিছু এড়িয়ে চলতে তো শিখে গেছি সেই কবে থেকে। কিন্তু সালেককে এড়াতে পারছি না কেন বুঝলাম না। সালেকের হাসি টা কেমন যেন আমাকে খোঁচা দিচ্ছে। না সালেক আমার কাছে কিছু চেয়েছে না আমার ওর জন্য কিছু করার মুরোদ (স্বদিচ্ছা) আছে?

এটি ছিল তার স্ট্যাটাসের অংশবিশেষ, কমেন্টে প্রীত খুঁজতে থাকেন সালেকের পাশে দাঁড়াতে স্থানীয় কাউকে পান কি না। তার স্ট্যাটাস দেখে এগিয়ে এলো সিলেটেরই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সেভ সিলেট’। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা আয়ান মুমিনুল হক তাৎক্ষণিক লোক পাঠালেন সেখানে, এরপর বদলে যায় সালেকের গল্প।

আয়ান বলেন, সালেককে ভর্তি করানো হয়েছে আমাদের জাদুর স্কুল প্রজেক্টে। তাকে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের আন্তর্জাতিক খেলা দেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে, এটা ছিল তার প্রথম স্টেডিয়ামে যাওয়ার অভিজ্ঞতা। প্রীত ভাইয়ের স্ট্যাটাস থেকেই সালেকের কথা জানতে পারি। ওর পাশে থাকতে পেরে আনন্দিত। এভাবে সবাই এগিয়ে আসলে বদলে যাবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জীবন।

আয়ান আরও বলেন, ‘স্পন্সার এ চাইল্ড’ কার্যক্রম এর আওতায় সেভ সিলেট সালেকের দায়িত্ব নেবে। তার দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশের ফটোগ্রাফিক দুনিয়ার আইকন প্রীত রেজা ভাই।

এই ঘটনায় উচ্ছ্বসিত প্রীত রেজা বলেন, আমরা অনেক সময় সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যাই, সেই জায়গায় এভাবে আমার একটা ফেসবুক স্ট্যাটাসে সেভ সিলেটের এগিয়ে আসা আমার জন্য বিরাট আনন্দের, সালেকের জন্য সবাই দোয়া করবেন।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আবেগাপ্লুত সালেক বললো, আমি ইশকুলে যাচ্ছি, আমার জন্য দোয়া করতে বইলেন সবাইরে।

সূত্র : জাগো সিলেট