হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ প্রকল্পের কাজে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে কর্মরত পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) সভাপতি।
অভিযোগে মাটিয়ান হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধের ৩৯ নাম্বার পিআইসি সভাপতি ও রতনশ্রী গ্রামের বাসিন্দা তানজিম হাসান সোহাগ দাবি করেছেন যে ফসল রক্ষা বাঁধ সংশ্লিষ্ট উপজেলা সদস্য সচিব প্রকৌশলী মনির হোসেন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, এ বছর ৩৯ নম্বর পিআইসিতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী প্রথম দিকের বরাদ্দের ৪ লাখ ৮২ হাজার টাকা পেয়ে বাঁধে মাটি ভরাটের কাজ শুরু করি। পরে দ্বিতীয় ধাপে বরাদ্দের টাকা আনতে গেলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেন কাজের অগ্রগতি ভালো না বলে ভয়ভীতি দেখান এবং ঘুষ দাবি করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন যে অর্থ ছাড় পেতে ঘুষ দিয়ে দুই ধাপে ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন তিনি। কিন্তু বাঁধের সম্পূর্ণ কাজ শেষ হওয়ার পরও বকেয়া টাকা ছাড় দিতে গড়িমসি করছেন প্রকৌশলী মনির হোসেন।
প্রকল্পের কাজ ঠিকমতো হয়নি বলে হুমকি এবং বরাদ্দের বকেয়া টাকা দেয়া হবে না বলে পিআইসি সভাপতি জানানো হয়েছে বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
এ বিষয়ে পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেনের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে পিআইসি সভাপতিদের অভিযোগের শেষ নাই। এসব অভিযোগ শুনতে শুনতে আমি অভ্যস্ত হয়ে গেছি।‘
তিনি বলেন, ‘হাওরে বাঁধ মেরামতে মূলত মাটি ভরাটের কাজটা আমি তদারকি করি। এস্টিমেট অনুযায়ী যেটুকু কাজ হয় তা সার্ভেয়ার প্রতিবেদনে দেয়, সে অনুযায়ী আমি বরাদ্দের অর্থ ছাড় দেই।‘
অভিযোগকারীরা প্রকল্পের সম্পূর্ণ কাজ না করেই পুরো বিল চাচ্ছেন এবং তাদের কথামতো টাকা দিচ্ছি না বলেই তার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগে আনা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার বলেন, ‘অভিযোগ যেহেতু দুদকে করা হয়েছে, তারা তাদের মতো করে বিষয়টি দেখবেন। আমাদের কাছে কেউ এমন অভিযোগ করলে বিষয়টিতে বিধি অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।‘
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক জাবেদ হাবিব বলেন, ‘অভিযোগ হাতে পেলে এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।‘