সুনামগঞ্জে পরিবহনে অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতি, ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ

সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের লামাকাজী নামকস্থানে এম.এ খান সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে যানবাহন বন্ধ রেখে দূরপাল্লার পরিবহনে অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতি চলছে।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সকল ধরনের দূর পাল্লার যানবাহন বন্ধ রেখে এই কর্মসূচি পালন করছে পরিবহন মালিক শ্রমিকরা। আর এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই এই পরিবন কর্মবিরতির না জানায় বাস ষ্টেশন এসে পড়ছেন বিড়ম্বনায়।

সরজমিনে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পুরাতন বাস-স্টেশন ও নতুন বাস-স্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, জেলার তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর এবং জামালগঞ্জ এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ সিলেটসহ বিভিন্ন গন্তব্য স্থানে যাওয়ার জন্য বাস-স্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখেন সকল ধরনের দূর পাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এ দিকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে কাজ করা দিন আনা দিন খাওয়া দিনমজুর শ্রমিকরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়। তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য এ পৌঁছাতে পারছেন গাড়ি চলাচল না করায়।

জানা যায়, সুনামগঞ্জ – সিলেট মহাসড়কের লামাকাজী নামকস্থানে এম.এ খান সেতুটি ৭কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়ে নিমার্ণ করা হয়েছিল কিন্তু দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে টোল আদায়ের পর ছাত্র-জনতার দাবির মুখে ৫ আগস্টের সরকার পতনের পরে টোল আদায় বন্ধ হয়।
আওয়ামী সরকারের পতনের কিছুদিন টোল আদায় বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি আবারও টোল আদায় চালু হওয়ায় সিলেট বিভাগীয় কমিশনারকে বিষয়টি অবগত করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে টোল আদায় বন্ধ না হওয়ায় এই কর্ম বিরতির ডাক দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মালিক শ্রমিক নেতৃত্ববৃন্দ।

ভোগান্তিতে পড়া প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা মিনাক্ষী রাণী দাস জানান, আমি শান্তিগঞ্জ উপজেলার শেষ সীমান্তের একটি স্কুলে শিক্ষকতা করি। প্রতিদিন সুনামগঞ্জ- সিলেট রুটে চলাচলকারি বাসে আমি প্রতিদিন স্কুলে যাই কিন্তু আজ যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তারপরও তো চাকুরি আমরা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে উপস্থিত হতে হয়। দেখি যদি কোনও বিকল্প যানবাহন পাই যাওয়ার চেষ্টা করবও। আশা করি খুব দ্রুত এই সংকটের সমাধান হবে।

ভোগান্তিতে পড়া আরেক যাত্রী সাব্বির বলেন, হঠাৎ বাসচলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রীরা বেকায়দায় পড়েছে। অনেকেই বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্য স্থানে গেলেও বেশির ভাগ মানুষ হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

তাহিরপুর থেকে আসা রাজিব হোসেন বলেন, এম এ খান সেতুর টোল আদায় যখন বন্ধ ছিল তখন গণপরিবহন মালিক কিংবা শ্রমিকরা বাস ভাড়া কিংবা পরিবহন ভাড়া কম রাখেন নি। তাহলে টোল বন্ধের দাবিতে বাস বন্ধ করে আন্দোলন করতে হবে এটা কেমন কথা।

জেলা বাস- মিনিবাস সমিতি সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া বলেন, ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ সুনামগঞ্জে যানবাহন চলবে না।