বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি ড. অতুল ঝেলঝেলে, আইপিএস বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্ক চিরন্তন। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। তাই সীমান্ত উত্তেজনাও নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের মানুষের কৃষ্টি-সংস্কৃতি, জীবনধারা সবকিছুই মিলেমিশে জড়িয়ে রয়েছে এই সীমান্ত ঘিরে। সীমান্তে বিএসএফ সংবেদনশীল আচরণ করছে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান থাকার কারণে সীমান্তের বিভিন্ন সমস্যাগুলোর সমাধানসূত্র খুঁজে বের করা সম্ভব হচ্ছে।
গেল ২৯ জুন কলকাতাস্থ বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের হেডকোয়াটার অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দলের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি একথাগুলো বলেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি (পিএসও) অজিত কুমার টেটে, ডিআইজি (জি) এস এস গুলেরিয়া, ডিআইজি মুকেশ তিয়াগি (অপস.), ডিআইজি নরেশ চর্তুবেদী ও ডিসি মুসালে অভিনাশ।
বিএসএফ কর্মকর্তারা বলেন- ‘যদি হামলার কোনো শঙ্কা না থাকে, তবে সীমান্তে কোনো অবস্থাতেই গুলি চালায় না বিএসএফ। কেননা আমরা সীমান্ত হত্যা চাই না। সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই সীমান্তে এখন মারণাস্ত্র ব্যবহার করছি না। তবুও একটা দুইটা দুর্ঘটনা ঘটে যায়। সীমান্তে কোনো কোনো সময় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে গুলি চালাতেই হয় বিশেষ করে রাতের বেলায়। কারণ, এ সময়েই অনুপ্রবেশ ও পাচারের ঘটনা ঘটে। তাদের মধ্যে দুষ্ট লোক আছে। তারা অস্ত্র বহন করে।
বিএসএফের কর্মকর্তারা বলেন, চোরাকারবারীরা অস্ত্র বহন করে। তারা বিএসএফকে আক্রমণ করে। ফলে অনেকসময় বাধ্য হয়েই গুলি চালাতে হয়। বিএসএফ সীমান্তে যথেষ্ট বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহারই করে বলে জানায় বিএসএফের কর্মকর্তাবৃন্দ।
বিএসএফের কর্মকর্তারা আরো জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যার বড় একটি কারণ গরু চোরাচালান। বিএসএফ গরু পাচার বন্ধে অত্যন্ত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এরফলে গেল কয়েক বছরে এ অঞ্চলের সীমান্তে গরু চোরাচালান ব্যাপক হারে কমে প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এটা সত্য যে, বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো অর্থনৈতিকভাবে অনেক পিছিয়ে। কৃষি ছাড়া কাজ করে খাওয়ার মতো সেখানকার মানুষের আর তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হতে অনেকেই জেনেবুঝে সীমান্তের মরণফাঁদে পা বাড়ান। চোরাকারবারির সঙ্গে শুধু বাংলাদেশিরা নন, ভারতীয়রাও জড়িত। বিএসএফের গুলিতে অনেক ভারতীয়রা প্রাণও হারিয়েছেন।
দৈনিক কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি মেহেদি হাসান তালুকদারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সাংবাদিক প্রতিনিধি দলে ছিলেন- বাংলাট্রিবিউনের সিনিয়র রিপোর্টার রিয়াদ তালুকদার, দৈনিক যুগান্তরের সিনিয়র রিপোর্টার মো. হামিদুর রহমান ভুইয়া সিপন হাবিব, নিউজ টুয়েন্টিফোরের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট মো. নাহিদ হাসান, সিলেট সানের যুগ্ম সম্পাদক রবিকিরন সিংহ ও নিউজ টুয়েন্টিফোরের ক্যামেরা পারসন আখতারুজামান কানন।