সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আটটি ব্র্যান্ডের পোশাক। এতে প্রায় দুই কোটি ৮০ লাখ ডলার অর্থাৎ প্রায় ২৬০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ব্র্যান্ডগুলো ৮০টি কারখানা থেকে এসব পোশাক সরবরাহ করেছিল। ব্র্যান্ডগুলো হলো- এইচঅ্যান্ডএম, গ্যাপ, টার্গেট, সিঅ্যান্ডএ, এফ-লজিস্টিকস, ফিট লজিস্টিকস, গ্লোরি ও ডিএইচএল। কারখানা কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ক্ষয়ক্ষতির এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে পোশাক উৎপাদক ও রফতানি সংগঠন বিজিএমইএ। মঙ্গলবার রাতে এ তথ্য জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা।
এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ’র চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট রকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, পোশাক সরবরাহকারী কারখানাগুলোর তথ্যের ভিত্তিতে আর্থিক ক্ষতির হিসাব করা হয়েছে। কারখানার দেওয়া তথ্যের সঙ্গে কাস্টমস এবং শিপিং লাইনগুলোর তথ্য মিলিয়ে ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব করার চেষ্টা করেছি আমরা। ডিপোতে অক্ষত অবস্থায় ৬০টি কনটেইনার পেয়েছি। এগুলোতে পোশাক পণ্য রয়েছে। এসব পণ্যে আগুন লাগেনি। এগুলো রফতানিতে কোনও বাধা নেই। অন্য ডিপোর মাধ্যমে পণ্যগুলো জাহাজিকরণে ক্রেতাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। যাতে ক্রেতারা কম ক্ষতিগ্রস্ত হন।
তিনি বলেন, রফতানি চুক্তি অনুযায়ী পণ্য বুঝে পাওয়ার পর সব দায়দায়িত্ব ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের। রফতানির অপেক্ষায় থাকা বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনে পুড়ে নষ্ট হওয়া সব পণ্য ক্রেতার প্রতিনিধিরা বুঝে নিয়েছেন। সে হিসেবে ক্রেতারা দর পরিশোধ করবেন। ক্রেতারা বীমার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ পাবেন। ইতোমধ্যে সুইডেনভিত্তিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান এইচঅ্যান্ডএমের পক্ষ থেকে বিনষ্ট পোশাকের মূল্য পরিশোধের কথা জানানো হয়েছে। ডিপোতে থাকা মোট পোশাকের মধ্যে ৫০ শতাংশই ছিল এইচঅ্যান্ডএমের।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম বলেন, আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের নিয়ম হচ্ছে, ক্রেতারা পণ্য বুঝে নেওয়ার পর সব দায়দায়িত্ব তাদেরই থাকে। তারা যখন কাঁচামাল আমদানি করেন সেখানেও একইভাবে দায়দায়িত্ব নেন। বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। ওই দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এইচঅ্যান্ডএম। তারা যখন মূল্য পরিশোধের ঘোষণা দিয়েছে তখন বাকিরা নিয়মের ব্যত্যয় করবেন বলে মনে হয় না। কারণ, বাকিদের পণ্য খুব বেশি বিনষ্ট হয়নি। তাছাড়া বীমার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার ব্যবস্থা তো আছেই।
পোশাক ব্র্যান্ড জি স্টারের কান্ট্রি ম্যানেজার সাফিউর রহমান বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশের পোশাক বাণিজ্যে কোনও ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাক খাতের ঘুরে দাঁড়ানোর বাস্তবতা সারা বিশ্বের সংশ্লিষ্টদের কারও অজানা নয়। কাজেই এ ঘটনায় তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না।
বিজিএমইএর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পোশাকবোঝাই ৬০টি কনটেইনার অক্ষত আছে। কনটেইনারের ভেতরে পোশাক পণ্যেরও কোনও ক্ষতি হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এগুলো রফতানি করা যাবে।