একুশে পদকপ্রাপ্ত শব্দ সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী সিলেট-২ সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে বিশ্বনাথ-ওসমানীনগরের সর্বস্তরের মানুষের দোয়া-প্রার্থনা ও সহযোগিতা কামনার পাশাপাশি সিলেট-২ সংসদীয় আসনের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য আজীবন নিরলস কাজ চালিয়ে যাবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু তনয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রেখেই দীর্ঘদিন ধরে জনমানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি দিনরাত আমার এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমি প্রকৃত অর্থেই সিলেট-২ আসনের সর্বস্তরের নাগরিকদের জন্য আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমি আশাবাদী, সিলেট-২ সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী হিসেবে ‘নৌকা’ প্রতীকের মনোনয়ন পাবো। আমি ‘নৌকা’ প্রতীকে নির্বাচন করে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো এবং মানুষের জন্য কাজ করতে পারবো।’
তিনি গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার এই আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এতে তিনি বলেন, ‘আমার জীবনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যই হচ্ছে আর্তমানবতার সেবা করা। আমৃত্যু আমি মানুষের কল্যাণে সততা ও দায়িত্বশীলতার মধ্য দিয়ে কাজ করে যাবো।’
একুশে পদকপ্রাপ্ত শব্দ সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘদিন ধরে। তিনি মানস (মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির উপদেষ্টা, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য, ইব্রাহীম মেডিকেল কলেজের ডিপার্টমেন্ট অব ডেন্টালসার্জারির প্রফেসর, বারডেম হাসপাতালের ডিপার্টমেন্ট অব ডেন্টাল সার্জারির সাম্মানিক উপদেষ্টা, বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের শিল্পী, উপস্থাপক।
১৯৫২ সালে সিলেটের এক সম্ভ্রান্ত জমিদার বংশে জন্মগ্রহণ করেন। মাতা বিশিষ্ট সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মঞ্জুশ্রী চৌধুরী, পিতা সিলেটের কৃতিসন্তান শৈলেন্দ্র কুমার চৌধুরী, বড়ভাই অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, বোন অধ্যাপক ড. মধুশ্রী ভদ্র। স্ত্রী একজন সুগৃহিনী গৌরী চৌধুরী, দুই পুত্র অনির্বাণ চৌধুরী ও সপ্তক চৌধুরী। ড. চৌধুরী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতা সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন এবং স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একজন কণ্ঠশিল্পী/শব্দ সৈনিক। ১৯৭৬ সালে ঢাকা ডেন্টাল কলেজ থেকে বি.ডি.এস, ১৯৮২-৮৩ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দন্ত চিকিৎসায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফেলোশিপ এবং ১৯৯২-৯৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক এট স্ট্রনিব্রোক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দন্ত চিকিৎসায় ফেলোশিপ লাভ করেন। ২০০০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি পিএইচডি। ২০১২ সালে তিনি ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ অব সার্জনস থেকে ঋউঝজঈঝ (ফেলোশিপ ইন ডেন্টাল সার্জারি রয়েল কলেজ অব সার্জনস) ডিগ্রি লাভ করেন। দীর্ঘ ৪৬ বছর এদেশের মুখ ও দন্ত চিকিৎসার ক্ষেত্রে বহু প্রকাশনা ও গবেষণা কাজ করেছেন এবং মুখের চিকিৎসার বিভিন্ন আধুনিক তথ্য বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশ করেছেন ও রোগ প্রতিরোধের উপর বেতার, টেলিভিশনে অনুষ্ঠান নির্মাণ ও উপস্থাপনার মাধ্যমে জনগণের কাছে সচেতনতা বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।
ড. চৌধুরী ১৯৮৯ সালে মাদক ও ধূমপানবিরোধী সংগঠন ‘মানস’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং এ সংগঠনের মাধ্যমে দেশের যুব সম্প্রদায়কে ধূমপান ও মাদকদ্রব্যের কুফল সম্পর্কে বিগত ৩৩ বছর ধরে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। অধ্যাপক চৌধুরী বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ উপদেষ্টা কমিটির একজন উপদেষ্টা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত টাস্কফোর্সের একজন সদস্য। ১৯৮০ সাল থেকে বেতার ও টেলিভিশনে একজন সফল স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান উপস্থাপক। সঙ্গীত জগতে ৬০ বছর ধরে জড়িত এবং বর্তমানে বেতার, টেলিভিশনে বিশেষ শ্রেণিভুক্ত রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী এবং নিয়মিতভাবে রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করছেন। ইতিমধ্যে রবীন্দ্র সঙ্গীতের ৪টি অডিও সিডি ও দুইটি ভিডিও সিডি প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে ইউটিউবে তার গান, মিউজিক ভিডিও, বিভিন্ন তথ্যচিত্র ও তার পরিচালিত চলচ্চিত্র প্রচারিত হচ্ছে।