সিলেট-১ : প্রচারণায় শুধু নৌকা, বাকিদের খবর নেই

গত ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মূল লড়াইয়ের হুইসেল বেজে গেছে। আগামী ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রচারণা চালিয়ে ভোটার আকৃষ্ট করতে পারলে ৭ জানুয়ারি ভোটের ফল ঘরে তুলতে পারবে প্রার্থীরা। এই ১৮ দিনই মূলত প্রার্থীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

তবে সিলেটের ছয়টি নির্বাচনী আসনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন সিলেট-১ এ এখনো নির্বাচনী আমেজ পরিলক্ষিত হচ্ছেনা। ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ড. একে আব্দুল মোমেন ছাড়া বাকিদের দেখা যায় নি আজ পর্যন্ত। প্রচারণা শুরুর ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পোস্টার-ব্যানারের প্রচারণা দেখা যাচ্ছেনা। নির্বাচন আসলেই যেখানে মাইকের শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে যাবার কথা সেখানে সিলেট মহানগরী এখনো নিরব। নৌকা মার্কার প্রচারণায় কয়েকটি মাইক বেজে উঠলেও প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীদের নামও জানেন না সাধারণ ভোটাররা। নগরীর কোথাও নেই পোস্টার, নেই ব্যানার।

সিলেট-১ আসনে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোট ৪ জন। এর মধ্যে সম্মিলিত মুক্তিজোটের প্রার্থী আব্দুল বাসিত রয়েছেন ছড়ি প্রতীকে। ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) প্রার্থী ইউসুফ আহমদ। তার প্রতীক আম। ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী ফয়জুল হক দলীয় প্রতীক মিনার নিয়ে আছেন নির্বাচনে এবং বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. সোহেল আহমদ চৌধুরী ডাব প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

তবে প্রচারণার ৫দিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত এই চার প্রার্থীর কোনো প্রচারণা চোখে পড়েনি। হিসাবটা এমন যেনো একপেশে নির্বাচন হতে যাচ্ছে এই আসনে।

নির্বাচন প্রসঙ্গে কথা হয় নগরীর শাহী ঈদাগাহ এলাকার শংকর দাশের সাথে। সিলেট ভয়েসের সাথে আলাপে তিনি বলেন, ভোটের কিছুতো চোখে পড়ছেনা। মাইকে শুধু নৌকা মার্কার প্রচারণা শুনি। আর কোনো প্রার্থী বা প্রতীকের নামও শুনিনি এখনো।

খাসদবীর এলাকার চা বিক্রেতা লাল মিয়া বলেন, আপনি না বললে জানতামইনা অন্য কেউ নির্বাচনে আছেন, নৌকা ছাড়া আর কারও মাইকের আওয়াজতো শুনিনি। সারাদিনই নৌকার প্রচারণা দেখি। কাল জুম্মার নামাজের পর কয়েকজন এসে লিফলেট দিয়ে গেলেন, তাও নৌকার মার্কার। অন্য কেউ এখনো আসেন নি।

তবে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. সোহেল আহমদ চৌধুরী দাবি করেন শনিবার থেকে তিনি প্রচারণায় নেমেছেন। তিনি বলেন, আমি আজ (শনিবার) থেকে গণসংযোগে বেরিয়েছি। নগরীর বেশ কয়েক জায়গায় লিফলেট বিতরণ করেছি। যেটুকু গণসংযোগ রেছি তাতে জনগণের বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি।

অপরদিকে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই প্রচারণায় ব্যস্ত আওয়ামী লীগ প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিজে যেমন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন, তেমনি আলাদাভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন তার স্ত্রী সেলিনা মোমেন। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও দিনভর খেটে চলেছেন নৌকার প্রচারণায়।

নৌকার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটানো সিলেট মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হক ইলিয়াছি দিনার বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এখন উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে। গত ১৫ বছরে যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে সেকারণে এমনিতেই নৌকার প্রতি মানুষের সমর্থন জোরালো। আমরা কয়েকটি ইউনিটে ভাগ হয়ে মহানগরীর বিভিন্ন প্রান্তে প্রচারণা চালাচ্ছি। প্রতিটি ওয়ার্ডে দায়িত্ব ভাগ করে দেয়া আছে, তাছাড়া মহানগর যুবলীগের সিনিয়ররাও দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। তাই ৭ তারিখ গণমানুষের রায়ে নৌকাই বিজয়ী হবে এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।

তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য যত বেশি সম্ভব মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা যাতে মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে নিজের ভোট প্রয়োগ করেন। ভোটের দিন অন্তত ৬০-৭০% ভোটারের উপস্থিতি আশা করছেন বরে জানান এই যুবলীগ নেতা।