সদ্য বিদায়ী ২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় সিলেট বিভাগের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)। এই সময়ে বিভাগজুড়ে মোট ২৯৪টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৬৬ জন। এছাড়া এসময় আহত হয়েছেন আরও ৪৬৪ জন।
বিভাগের চার জেলার মধ্যে সিলেট জেলায় সর্বোচ্চ ১১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫৯ জনের মৃত্যু ও ১৪৪ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া সুনামগঞ্জ জেলায় ৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮ জন নিহত ও ৪৯ জন আহত হয়েছেন। মৌলভীবাজার জেলায় ৩৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১ জন নিহত ও ৬৮ জন আহত হয়েছেন। হবিগঞ্জ জেলায় ১০৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৮ জন নিহত ও ২০৩ জন আহত হয়েছেন।
নিসচার প্রতিবেদনে ২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২২ সালে সিলেট বিভাগে ২৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৭ জন নিহত ও ৪৩৫ জন আহত হয়েছিলেন।
নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট-চট্রগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মিশু গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, দেশের ১১টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন পত্রিকার তথ্য, অনুমেয় অনুজ্জ বা অপ্রকাশিত ঘটনা ও নিসচার শাখা সংগঠনগুলোর রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও নিসচা সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরী করেছে।
প্রতিবেদনে সড়কে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং এর অভাব, ট্রাস্কফোর্স কর্তৃক প্রদত্ত ১১১টি সুপারিশনামা বাস্তবায়ন না হওয়া, চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতা, ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে ওভারটেকিং, লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, সিটবেল্ট ব্যবহার না করা, বিরতী ছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালনা, চালকের মাদকের আসক্তি, মহাসড়কে নির্মাণ ত্রুটি, গাড়িতে শিশুদের উপযোগী আসনা না থাকা, সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি বৃদ্ধি পাওয়া, মোটরসাইকেল চালকদের মানসম্মত হেলমেট ব্যববহার না করা, রাস্তার পাশে হাটবাজার ও দোকানপাট বসানো ও চালকদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি চালানোকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার অভাব, সড়ক পরিবহণ আইন ২০১৮ এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়া, অশিক্ষিত ও অদক্ষ চালক দ্বারা গাড়ি চালানো ইত্যাদি দুর্ঘটনা মূল কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
জেলা পর্যায়ে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে অতিরিক্ত লোক সংখ্যা, অপর্যাপ্ত রাস্তা, মোটরসাইকেল ও রিক্সার আলাদা লেন না থাকা, অবৈধ ব্যাটারীচালিত যান, সড়ক-মহাসড়কে উঠে বেপরোয়া গতিতে চলা, পথচারীদের নিয়ম না মানার প্রবণতা, জেব্রাক্রসিং, ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস ব্যবহার না করে যত্রতত্র পারাপার ও রাস্তা চলাচল, রাস্তা পারাপার ও গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করাকে দায়ী করা হয়েছে।