সিলেট বিভাগের চার জেলার ১৯ আসনের মধ্যে ১৫টিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। বাকি ৪টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। এই চারজনের মধ্যে তিনজনই আওয়ামী লীগ নেতা এবং অপরজন ইসলামী নেতা।
রবিবার রাত ১১টায় সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান সিলেট জেলার ৬টি আসনের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেন। ঘোষিত ফলাফলে সিলেটে ৫টিতে আওয়ামী লীগ ও একটিতে স্বতন্ত্র বিজয়ী হন।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী সিলেট- ১ আসনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মাওলানা ফয়জুল হক মিনার প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ১৯৩ ভোট। এছাড়া এই আসনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ইউসূফ আহমদ (আম) ৯৬৩ ভোট, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আবদুল বাছিত (ছড়ি) ৯০৭ ভোট ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের সোহেল আহমদ চৌধুরী (ডাব) ৪৫০ ভোট পেয়েছেন। এই আসনে শতকরা ভোট প্রয়োগের হার ১৯.৩০ ভাগ ।
সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী (নৌকা) ৭৮ হাজার ৩৮৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুহিবুর রহমান (ট্রাক) পেয়েছেন ১৬ হাজার ৬৬১ ভোট। এছাড়া, জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরী (লাঙ্গল) ৬ হাজার ৮৭৪ ভোট, গণফোরামের মোকাব্বির খান (উদীয়মান সূর্য) ১ হাজার ৯২২ ভোট, তৃণমূল বিএনপির মো. আবদুর রব (সোনালী আঁশ) ৯৪৪ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মনোয়ার হোসাইন (আম) ২৫৩ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জহির (ডাব) ১৮৫ ভোট পেয়েছেন। এই আসনের শতকরা ভোট প্রয়োগের হার ৩০.৯৯ ভাগ।
সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব ৭৯ হাজার ৬৭১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী, বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন-বিএমএ’র কেন্দ্রীয় মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল (ট্রাক) পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৮৩৬ ভোট। এছাড়া জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক (লাঙ্গল) ৪ হাজার ২৬৯ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম (ঈগল) ১৩৩ ভোট, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. ময়নুল ইসলাম (মিনার) ২০৩ ভোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম (মোমবাতি) ৫৬০ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনোয়ার হোসেন আফরোজ (আম) ২২০ ভোট পেয়েছেন। এই আসনের শতকরা ভোট প্রয়োগের হার ৩১.৬৫ ভাগ।
সিলেট-৪ আসনে নৌকা প্রতীকে ২ লাখ ৭ হাজার ৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল বিএনপির আবুল হোসেন (সোনালী আঁশ) পেয়েছেন ৪ হাজার ১১ ভোট। এছাড়া ইসলামী ঐক্যজোটের নাজিম উদ্দিন কামরান (মিনার) ৩ হাজার ৫২ ভোট পেয়েছেন। এই আসনের শতকরা ভোট প্রয়োগের হার ৪৫.৭০ ভাগ ।
সিলেট-৫ আসনে কেটলি প্রতীকে ৪৭ হাজার ১৫৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী (র.) এর ছেলে ও আঞ্জুমানে আল ইসলাহ’র কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা হুছাম উদ্দিন চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৩২ হাজার ৯৭৩ ভোট। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. আহমদ আল কবীর (ট্রাক) পেয়েছেন ২০ হাজার ২৩০ ভোট, তৃণমূল বিএনপির কুতুব উদ্দিন সিকদার (সোনালী আঁশ) ২ হাজার ২০৭ ভোট, জাতীয় পার্টির শাব্বীর আহমদ (লাঙ্গল) ১২৪ ভোট ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. বদরুল আলম (ডাব) ১৫৯ ভোট পেয়েছেন। এই আসনের শতকরা ভোট প্রয়োগের হার ২৫.৯৬ ভাগ ।
সিলেট-৬ আসনে ৫৭ হাজার ৭৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ (নৌকা)। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী, কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হোসেন (ঈগল) ৩৯ হাজার ৪৮৮ ভোট। এছাড়া তৃণমূল (৩ এর পাতা দেখুন
সিলেট জেলার ৬ আসনে ২৯.৪৬ ভাগ ভোট পড়েছে বলে সিলেটের জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার শেখ রাসেল হাসান জানিয়েছেন।
বাকি ৩ জেলার বিজয়ী যারা :
সুনামগঞ্জ-১ : রনজিত চন্দ্র সরকার (আওয়ামী লীগ)
সুনামগঞ্জ-২ : ড. জয়া সেন গুপ্তা (স্বতন্ত্র)
সুনামগঞ্জ-৩ : এম এ মান্নান (আওয়ামী লীগ)
সুনামগঞ্জ-৪ : মোহাম্মদ সাদিক (আওয়ামী লীগ)
সুনামগঞ্জ-৫ : মহিবুর রহমান মানিক (আওয়ামী লীগ)
হবিগঞ্জ-১ : আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী (স্বতন্ত্র)
হবিগঞ্জ-২ : ময়েজ উদ্দিন শরীফ (আওয়ামী লীগ)
হবিগঞ্জ-৩ : আবু জাহির (আওয়ামী লীগ)
হবিগঞ্জ-৪ : ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন (স্বতন্ত্র)
মৌলভীবাজার-১ : মো. শাহাব উদ্দিন (আওয়ামী লীগ)
মৌলভীবাজার-২ : শফিউল আলম চৌধুরী (আওয়ামী লীগ)
মৌলভীবাজার-৩ : মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান (আওয়ামী লীগ)
মৌলভীবাজার-৪ : উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ (আওয়ামী লীগ)
এর আগে রবিবার (৭ জানুয়ারি) বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বড় ধরণের কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ছাড়াই সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে টানা ভোটগ্রহণ। সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ১০৫ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ১৯ জন হাসেন বিজয়ের হাসি।