পরিবারের সাথে আনন্দে ঈদ উদযাপন করতে প্রতিবারই ঈদের আগে সিলেট ছাড়েন চাঁদপুরের কয়েক হাজার মানুষ। যেখানে বাসের সংখ্যা কম ও যাত্রীসেবা নিম্নমানের হওয়ায় প্রতিবারই বড় ধরণের দুর্ভোগ পোহাতে হয় চাঁদপুরবাসীকে।
তবে ঈদ যাত্রায় আর ঝক্কিঝামেলা নয়। ‘ঈদের আনন্দে ভরে উঠুক প্রতিটা ঘর, প্রতিটা প্রাণ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে এই প্রথবারের মতো চালু হয়েছে সিলেট টু চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল ট্রেন।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে ১০টি বগি নিয়ে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ট্রেনটি। স্পেশাল এ ট্রেনটির চালক ছিলেন লোকোমাস্টার মো. মঞ্জুরুল আলম ও সহকারী লোকোমাস্টার আবু ইউসুফ।
মোট ৫১৪ সিটের ট্রেনটি সিলেট থেকে চাঁদপুর যাত্রাকালে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন, সিলেটস্থ চাঁদপুর জেলা কল্যাণ সমিতির সভাপতি গাজী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল হক মিয়াজী, সহ-সভাপতি এস এম আমান উল্লাহ, বাবুল হোসেন চৌধুরী, ফজলে আজিম পাটোয়ারী, মো. শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক মহসিন ভূঁইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুরশেদ আলম বুলবুল, জাকির হোসেন, সেলিম মজুমদার, অর্থ সম্পাদক প্রকৌশলী আবুল হাসনাত, সহ অর্থ সম্পাদক শামছুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন মুন্সি, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম ভূঁইয়া, প্রচার সম্পাদক লোকমান হোসেন গাজী, দপ্তর সম্পাদক আব্দুল করিম ভূঁইয়া, সমাজকল্যাণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম সরকার, শিক্ষা সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন রনি, গ্রন্থাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক রবিউল হোসেন টিটু, নির্বাহী সদস্য তৌফিক মাহমুদ হাসান, প্রফেসর বাবুল আকতার, প্রফেসর নাছরীন আক্তার, মানিক গাজী, রফিকুল ইসলাম, আবু ইউসুফ, মোস্তফা কামাল, আমির হোসেন খাঁন, সাইফুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আকবর পাটোওয়ারী, ছিদ্দিক খাঁ, পারভেজ আহমদ জুয়েল। আজীবন সদস্য ইউসুফ খাঁন, শওকত আলী প্রমুখ।
সিলেটস্থ চাঁদপুর জেলা কল্যাণ সমিতির দাবির প্রেক্ষিতে বিশেষ ট্রেন চালু করা হয় বলে দাবি করেছেন সমিতির সভাপতি ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক গাজী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, ‘বিগত ২০১৯ সালে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপির (স্বারক নং-চা, জে, ক, স, ২০১৯/০৫) মাধ্যমে আমরা সিলেটে নানা পেশায় থাকা চাঁদপুরবাসী নিরাপদে চলাচলের জন্য ট্রেন চালুর দাবি জানাই। তারই প্রেক্ষিতে আজকে ট্রেনটি চালু হয়।’
ট্রেন যাত্রী শাহরাস্তির নোমান পাটোয়ারি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘কখনো ভাবিনি ট্রেনে চড়ে সরাসরি বাড়ি ফিরতে পারবো।’ একটা এসি বগি সংযোজন করে ট্রেনটি নিয়মিত চালু করার দাবি জানান।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলীয় জোনের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, যাত্রীদের ঈদ যাত্রার আনন্দকে আরো রাঙ্গিয়ে তুলতে ঈদ স্পেশাল ট্রেন চলাচলের উদ্যোগ নেয়া হয়। ঈদে ঘরমুখি যাত্রীদের ভোগান্তি হ্রাস করতে বিশেষ এ ট্রেন চালু করা হয়। তবে ঈদের দিন ট্রেনটি চলাচল বন্ধ থাকবে বলে তিনি জানান।
রেলওয়ে সিলেট কর্তৃপক্ষ জানায়, সিলেট-চাঁদপুর রুটে চলাচল শুরু করেছে ঈদ স্পেশাল ট্রেন-৯ ও ১০। ঈদ স্পেশাল-৯ ট্রেনটি মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) থেকে যাত্রা শুরু করে। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চলাচল করে ঈদের দিন বন্ধ থাকবে। ঈদের পরদিন থেকে আবার চালু হয়ে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচল করবে।
অপরদিকে ১৯ এপ্রিল থেকে যাত্রা শুরু করবে ঈদ স্পেশাল-১০। এটিও ঈদের আগের দিন পর্যন্ত চলাচল করে ঈদের দিন বন্ধ থেকে পরদিন থেকে আবার চালু হয়ে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচল করবে। ঈদ স্পেশাল-৯ বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে সিলেট থেকে ছেড়ে যাবে চাঁদপুরের উদ্দেশে। পৌঁছাবে রাত ১২টা ১৫ মিনিট নাগাদ। আর ঈদ স্পেশাল-১০ ভোর ৪টায় চাঁদপুর থেকে ছেড়ে সিলেট আসবে দুপুর ১২টায়।