সিলেটে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায়নিহতদের মধ্যে ১০জনই দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের। যে কারণে, দুর্ঘটনার পর থেকেই ভাটিপাড়া গ্রামে চলছে শোকের মাতম।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নিহতের স্বজনরা দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন, কেউবা স্বজন হারানোর শোকে মাতম করছেন। স্বজন হারানোর কষ্টে ভাটিপাড়া গ্রামের পাড়া মহল্লায় চলছে কান্নার রোল।
মর্মান্তিক এ সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন স্বামী, কেউ হারিয়েছেন সন্তান আবার কেউবা ভাই। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যকে হারিয়ে ভাটিপাড়া গ্রামের খালপাড় হাটি, বাজার হাটি ও চৌধুরী হাটির ৯টি বাড়িতে চলছে আর্তনাদ।
আরও পড়ুন : সিলেটে লাশের মিছিল, স্বজনদের কান্না-আর্তনাদ
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, বৈশাখী কাজ শেষ করে এলাকায় কোন কাজ না থাকায় বাড়ি থেকে সিলেটে যান তারা। আবার অনেকে ঈদের খরচ জোগাতে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে বের হন বাড়ি থেকে।
এদিকে স্বজনরা লাশের অপেক্ষায় বিলাপ করে যাচ্ছেন। কেউবা চাপা কান্নায় রয়েছেন নিথর নির্বাক হয়ে।
নিহত নির্মাণ শ্রমিক রশিদ মিয়ার স্ত্রী মোছা রাছিফা বেগম। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি স্বামীকে হারিয়ে তার দুই ছেলে বাপ্পী (১২) ও রিহান (৮) ও মেয়ে শাহিমা বেগম (১৭)কে নিয়ে করছেন আর্তনাদ। স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে যেন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। কান্না থামছে না অবুঝ শিশুদের।
এক সপ্তাহ আগে বেড়ানোর কথা বলে সিলেটে যায় সৌরভ মিয়া। পরে বাড়ির লোকদের না জানিয়েই পরিচিতদের সঙ্গে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে লেগে যান।
এদিকে বাড়িতে তার বিয়ের জন্য পাত্রী পছন্দ করে রেখেছিলেন মা আমিনা বেগম। ছেলে সৌরভের (২৭) মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না শোকাতুর আমিনা বেগম।
গ্রামের মানুষ অধীর শোকে রয়েছে লাশের অপেক্ষায়। লাশ আসতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। এরপর একসাথে জানাজা সম্পন্ন করা হবে।
মর্মান্তিক এ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন দিরাই শাল্লার সাংসদ ড. জয়া সেনগুপ্তা।
এর আগে, বুধবার (০৭ জুন) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন নাজিরবাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মালবাহী ট্রাক ও শ্রমিক বহনকারী পিকআপের সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হন।