সিলেটে শহিদমিনার ভাড়া দেয়ার চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার ভাড়া দেয়ার চক্রান্তের বিরুদ্ধে সিলেটে প্রতিবাদ সমাগম অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনারের সামনে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বানে এ প্রতিবাদ সমাগমের আয়োজন করা হয়।

এসময় বক্তারা বলেন, শহিদমিনার কেবল ইট সিমেন্টের স্থাপনা নয়, এটি দেশের জন্য যারা আত্মাহুতি দিয়েছিলেন তাদের চেতনাকে সঞ্চারিত করার স্তম্ভ। শহিদমিনার জাতীয় ঐক্য ও শৌর্যের প্রতীক। ফলে শহিদমিনারকে ভাড়া প্রদান বা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের চিন্তা বাঙালি চেতনা ও জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধেই চক্রান্ত। এমন চক্রান্তকে প্রতিহত করতে হবে।

সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম সদস্য হ্যারল্ড রশিদ সভাপতিত্বে ও আরেক সদস্য এনামুল মুনীরের সঞ্চালনায় এতে সিলেটের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।

শুরুতে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনার প্রকল্প বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাগরিক আন্দোলনের সংগঠক আব্দুল করিম কিম।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রতিক্রিয়াশীর চক্র বাংলাদেশের ওপর আক্রমণ চালাতে সবসময় এই শহিদমিনারে হানা দেয়। এ আক্রমণ হয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক। বাংলার মানুষ শহিদমিনারের সুরক্ষিত চেতনাকে শানিত করে যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, তেমনি চেতনাকে ভোতা করে দিতে বৈরি শক্তি আজও নানা ফন্দিফিকির করছে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, শহিদমিনার হবে চেতনার গণপরিসর। এটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। নতুন প্রজন্ম এখানে এসে বাঙালির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস জেনে গর্বিত হবে। এখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ ও ভাড়া দেওয়ার পরিকল্পনা চরম ধৃষ্টতা। শহিদমিনারের চেতনাবিনাশী সকল তৎপরতা আমাদের রুখে দিতে হবে। শহিদমিনারের মূল চেতনাকে নিয়ন্ত্রণ করার দুরভিসন্ধি আমাদের প্রতিহত করতে হবে।

সমাবেশে আয়োজকদের পক্ষ থেকে শহিদমিনারে সমাবেশের জন্য ফি আদায়ের সিদ্ধান্ত বাতিল, আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দেওয়ার জন্য নির্মিত স্থাপনা অপসারণ, শহিদমিনারের মূল নকশাবহির্ভুৎ স্থাপনা অপসারণ, শহিদমিনার কমপ্লেক্সের অসমাপ্ত কাজ দ্রুত সম্পন্নসহ সাত দফা দাবি জানানো হয়।

এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিজিত চৌধুরী, বাংলাদেশ জাসদ এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাকির আহমেদ, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শমসের জামাল ও দপ্তর সম্পাদক জগলু চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী ও কৃষি বিষয়ক সম্পাদক তপন মিত্র, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, সিলেট এর আহ্বায়ক জান্নাতারা পান্না, বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি পরিষদের সভাপতি সৈয়দ আহমদ বাহলুল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, নাট্যকার বাবুল আহমদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক প্রিন্স সদরুজ্জামান চৌধুরী, বাদশা গাজী প্রমুখ।

প্রতিবাদ সমাগমে সংহতি জানান, তথ্যচিত্র নির্মাতা নিরঞ্জন দে যাদু, সাংস্কৃতিক সংগঠক বিভাস শ্যাম যাদন, গণজাগরণ মঞ্চ সিলেটের মুখপাত্র দেবাশীষ দেবু, ছাত্র ইউনিয়ন সিলেটের সভাপতি মনিষা ওয়াহিদ, দুষ্কাল প্রতিরোধ আন্দোলনের নিরঞ্জন সরকার, হাওর রক্ষা আন্দোলনের সাজিদুর রহমান সোহেল, চিত্রশিল্পী ইসমাইল গণি হিমন, লেখক ও গবেষক অ্যাডভোকেট আব্দুল মালিক, সাংবাদিক দেবব্রত দিপন প্রমুখ।