সিলেটে রোগীর কিডনি ‘অপসারণ’, তদন্ত করছে কমিটি

আমির খসরু

সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমির খসরু নামে এক রোগীর হাতের হাড়ভাঙার অস্ত্রোপচার করাতে গিয়ে কিডনি অপসারণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেছেন তিনি।

আদালতের নির্দেশে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৎকালীন সহকারী রেজিস্ট্রারসহ অস্ত্রোপচারে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের আসামি করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনা তদন্তে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিজবুল্লাহ জীবনকে। তদন্ত কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সোমবার (৬ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী।

তিনি বলেন, পাঁচ সদস্যের গঠিত কমিটি রোববার থেকে তদন্তকাজ শুরু করেছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা আছে।

গত ১ মার্চ সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতে মামলার লিখিত আবেদন করেন কানাইঘাটের ফতেহগঞ্জের বাসিন্দা ভুক্তভোগী খছরু মিয়া। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমির খসরুর বাঁ হাতের অস্ত্রোপচারের সময় তার বাঁ পাশের কিডনি খুলে নেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর থেকে তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। কোনো কাজ করতে পারছিলেন না। পাশাপাশি প্রস্রাব ও মলত্যাগে সমস্যা দেখা দেয়। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করে নিশ্চিত হন, তার বাঁ পাশের কিডনি নেই। আর্থিক সুবিধার জন্য চিকিৎসকরা তার কিডনি অপারেশন করে খুলে নিয়ে থাকতে পারেন।

মামলায় কারও নাম উল্লেখ না করলেও গত বছরের ১৯ নভেম্বর হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করা সহকারী রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টদের আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর মামলাটি এজাহারভুক্ত হয়েছে। মামলার অভিযোগ পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখছে। তদন্তের পর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান শংকর কুমার রায় বলেন, হাতের হাড়ভাঙার অস্ত্রোপচারে কিডনি অপসারণের সুযোগ নেই। ওই রোগীর শরীরের অন্য জায়গা থেকে হাড় সংগ্রহ করে হাতে জোড়া দেওয়া হয়েছিল। এটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। এর বাইরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের কোনো অপারেশন করা হয় না।