সিলেটের নাজিরবাজার এলাকায় আলোচিত সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ঘাতক ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রবিবার (১১ জুন) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৯ এর একটি আভিযানিক দল পটুয়াখালী সদর উপজেলা থেকে তাকে আটক করে।
আটক ট্রাকচালক মো. শফিকুল ইসলাম (২৭) শেরপুর সদর থানাধীন নয়াপাড়া মোকসেদপুর এলাকার মো. মিস্টার মিয়ার ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, র্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার সিনিয়র এএসপি আফসান-আল আলম।
এর আগে, গত ৭ জুন ভোরে ৩০জন নির্মাণ শ্রমিক প্রতিদিনের ন্যায় কাজের উদ্দেশ্যে একটি ডিআই পিকআপযোগে (যার রেজিঃ নং-সিলেট ন-১১- ১৬৪৭) সিলেট থেকে তাজপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ সুরমা থানাধীন নাজির বাজারের নিকটস্থ কুতুবপুর নামক স্থানে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উপর পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা সিলেটগামী একটি আলুভর্তি ট্রাকের (যার রেজিঃ নং-ঢাকা মেট্রো ট-১৩-০৭৮০) সাথে শ্রমিকদের বহনকারী পিকআপটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
খবর পেয়ে ফায়ারসার্ভিস ও দক্ষিণসুরমা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় আহত ১৮ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সেখানে আরো ৪ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত বাকি ১৪ জন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত সজিব আলীর ছেলে রশিদ আলী (২৫), শান্তিগঞ্জ উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের মৃত হারুন মিয়ার ছেলে দুলাম মিয়া (২৬), একই উপজেলার বাবনগাঁ গ্রামের মৃত ওয়াহাব আলীর ছেলে শাহিন মিয়া (৪০), দিরাই উপজেলার আলীনগর গ্রামের মৃত শিশু মিয়ার ছেলে হারিস মিয়া (৬৫), হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার হলদিউড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী আমিনা বেগম (৪৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত মফিজ মিয়ার ছেলে সায়েদ নূর (৫০), শান্তিগঞ্জ উপজেলার তলেরতন গ্রামের মৃত আওলাদ উল্লার ছেলে আওলাদ হোসেন (৬০), দিরাই উপজেলার পাথারিয়া গ্রামের মৃত ছলিম উদ্দিনের ছেলে একলিম মিয়া (৫৫), গচিয়া গ্রামের বারিক উল্লার ছেলে সিজিল মিয়া (৫৫), ভাটিপাড়া গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে সৌরভ মিয়া (২৭), নেত্রকোনার ভারহাট্টা উপজেলার দশদার গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে আওলাদ মিয়া (৩০), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের শমসের নুরের মেয়ে মেহের (২৪), দিরাই উপজেলার মধুপুর গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে দুদু মিয়া (৪০), একই গ্রামের শাহজাহানের ছেলে বাদশা (২২) ও দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মায়েদ নুরের ছেলে বাদশা (২২)।
এ ঘটনায় মৃত নির্মাণ শ্রমিক সায়েদ নূরের ছেলে বাদী হয়ে দক্ষিণ সুরমা থানায় গত ৭ জুন বিকালে অজ্ঞাতনামা চালকদের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইনে মামলা দায়ের করেন। এরপরই ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। এর একপর্যায়ে আজ রবিবার ভোরে ঘাতক ট্রাক চালককে আটক করে র্যাব।
পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আটক ট্রাক চালককে দক্ষিণ সুরমা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েন র্যাব-৯ এর সিনিয়র এএসপি আফসান আল আলম।
সিলেট ভয়েস/এএইচএম