সিলেটে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে পরিবহন ধর্মঘট হচ্ছে না!

বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে সামনে রেখে বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ সহ অন্যান্য বিভাগীয় শহরে ছিল অঘোষিত পরিবহণ ধর্মঘট। এতে সমাবেশে যোগ দিতে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংঘটনের নেতাকর্মীদের বেশ বেগ পোহাতে হয়। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও হয় বেশ আলোচনা-সমালোচনা।

এমন বাস্তবতায় সিলেট বিভাগীয় সমাবেশকে সামনে রেখে বিএনপি বেশ দুশ্চিন্তায়। এমনকি ধর্মঘট হলে লোকসমাগম বাড়াতে বিকল্প গণপরিবহনের চিন্তাও করতে হয় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের। তবে, বিএনপির জন্য আশার খবর হচ্ছে আসছে ১৯ নভেম্বর বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে সিলেটে পরিবহন ধর্মঘট হচ্ছে না।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সোমবার ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের বৈঠকে সিলেটে ধর্মঘটের কোন সিদ্ধান্ত আসেনি। সোমবার সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত চলে এ বৈঠক। এতে সভাপতিত্ব করেন, সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি।

ময়নুল ইসলাম বলেন, বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে সিলেটে সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দেরও ধর্মঘট ডাকার ইচ্ছা নেই। পাশাপাশি কেন্দ্রেরও নেই। তবে সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির বিষয়টি তারা জানেন না। যদি সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতি ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেয় এক্ষেত্রে তাদের কিছু করার থাকবে না।

এদিকে বিএনপি নেতাদেরও আশা, সিলেটের সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের কথা বিবেচনা করে ধর্মঘট থেকে বিরত থাকবেন পরিবহন মালিক শ্রমিকরা। তবে ধর্মঘট হলেও সমাবেশ সফল করতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া আছে বলে জানিয়েছেন তারা।

আসছে ১৯ নভেম্বর সিলেটে বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে বিএনপি। বিএনপির সমাবেশের আগের দিন থেকেই পরিবহন ধর্মঘট- এমনটিই ঘটেছে দেশের ছয় বিভাগে। সিলেটেও কী এর পুনরাবৃত্তি ঘটবে? এখানেও কি বিএনপির সমাবেশের আগেই ধর্মঘটে যাবেন পরিবহন শ্রমিকরা? সে প্রশ্নই সবার মনে।

প্রসঙ্গত, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দেশের সব বিভাগে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ফরিদুপরে সমাবেশ সম্পন্ন হয়েছে। সব বিভাগেই সমাবেশের আগের দিন থেকে শুরু হয় পরিবহন ধর্মঘট। এতে সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের পাশাপাশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষদেরও। সমাবেশের আগে ডাকা পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে সমালোচনা সত্ত্বেও সব বিভাগেই ঘটছে এমন ঘটনা।

ধর্মঘটের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে বাস মালিক সমিতি সিলেট জেলা শাখার সভাপতি আবুল কালাম বলেন, “সবকিছু বিবেচনা করেই আমাদের চলতে হয়। সরকারের কথাও শুনতে হয়। তাছাড়া যানবাহন ও যাত্রীদের নিরাপত্তার কথাও আমাদের ভাবতে হয়।”

তবে পরিবহন শ্রমিকরা ধর্মঘট ডাকলেও বিএনপির সমাবেশে তার কোন প্রভাব পড়বে না জানিয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “ধর্মঘটে কোথাও সমাবেশের ক্ষতি হয়নি। সাধারণ মানুষেরই ভোগান্তি হয়েছে কেবল। তাই আমরা আশা করবো জনদুর্ভোগ এড়াতে এবং সিলেটের রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্প্রীতির কথা বিবেচনায় রেখে এখানে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হবে না।”

তবে ধর্মঘট ডাকলেও সমাবেশে লোকসমাগম ঘটাতে বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিকল্প সব ধরণের ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছি। কোন গাড়ি না চললেও ১৯ তারিখে সিলেটে জনতার ঢল নামবে। কেবল আলীয়া মাদ্রাসা মাঠ নয়, পুরো সিলেট সেদিন সমাবেশের নগর হবে।’