সিলেটে বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে ফের বাড়তে শুরু করেছে নদনদীর পানি। শনিবার (১৫ জুন) সকাল নয়টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা ছাড়িয়ে গেছে। অন্যদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে গতকাল শুক্রবার থেকে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়াও সিলেটের সকল নদনদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। এ অবস্থায় ফের বন্যার আশঙ্কা করছেন সিলেটের নিম্নাঞ্চলের মানুষজন।
এদিকে, সিলেট আবহাওয়া অফিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৭৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড তিনটি স্টেশনে ৫১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। আর আবহাওয়া অফিস শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২০২ মিলিমিটার এবং আজ সকাল ৬টা থেকে সকাল নয়টা পর্যন্ত ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
সিলেটে বৃষ্টিপাত ছাড়াও উজানে অর্থাৎ ভারতের চেরাপুঞ্জিতে সর্বশেষ ২৪ ঘন্টায় ৫১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এসব বৃষ্টির পানি সিলেটের নদনদী দিয়ে নেমে আসে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শনিবার সকাল ৬টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে ১২ দশমিক ৫৬ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল নয়টায় তা বিপৎসীমা ছাড়িয়ে যায়। সকাল নয়টায় এই পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যা বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপরে।
গতকাল শুক্রবার এই পয়েন্টে পানি প্রবাহের মাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার। সুরমার পানি এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার।
অন্যদিকে, কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে গতকাল শুক্রবার থেকে বিপৎসীমার উপর দিয়ে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ শনিবার সকাল ছয়টায় বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। সকাল নয়টায় তা আরও বেড়ে ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। কুশিয়ারা নদীর পানি এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার।
এছাড়া সুরমা-কুশিয়ারা নদীর এই দুই পয়েন্ট ছাড়াও সবকটি পয়েন্টে পানি বাড়ছে। তাছাড়া সারিগোয়াইন, লোভা, ডাউকি ও ধলাই নদীর পানিও ফের বাড়তে শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, শনিবার সকাল নয়টায় সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে ৯ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে ১৩ দশমিক ৮৬ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ১০ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার, শেরপুর পয়েন্টে ৮ দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এছাড়াও লোভা নদীর পানি ১৩ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার, সারি নদীর পানি ১২ দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার, ডাউকি নদীর পানি ১০ দশমিক ৬৩ সেন্টিমিটার ও সারি গোয়াইন নদীর পানি ৯ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নদনদীর পানি ফের বাড়তে শুরু করেছে। সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি দুইটি পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য পয়েন্টেও পানি বাড়তে শুরু করেছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসেন বলেন, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২০২ মিলিমিটার এবং আজ সকাল ৬টা থেকে সকাল নয়টা পর্যন্ত ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সিলেটে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।