স্বল্পকালের জন্য হলেও সিলেটে হাইকোর্ট ব্র্যাঞ্চ চালু হওয়া উচিত বলে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। যদি সিলেটে হাইকোর্ট স্থাপিত হয় তাহলে সিলেটের মানুষের ন্যায় বিচারপ্রাপ্তি দ্রুত নিশ্চিত হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি পরিকল্পনামন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সিলেটে হাইকোর্ট ব্যঞ্চ স্থাপনে আইনমন্ত্রীর কাছে যাবেন বলে স্থানীয় আইনজীবীদের আশ্বস্ত করেন।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাতে সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির বার্ষিক নৈশভোজে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় বিলম্বিত বিচার ন্যায় বিচার ব্যহত করে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সিলেট অঞ্চলে সবচেয়ে বড়ো সমস্যা জায়গাজমি সংক্রান্ত। বিশেষ করে প্রবাসীদের জায়গা জমি তাদেরই দুষ্ট কিছু আত্মীয় স্বজন বিভিন্ন ভাবে দখলের চেষ্টা করে থাকে। এরকম মামলা এখানে বেশি হয়। তাই জায়গা জমি ও প্রবাসিদের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিতে করতে সিলেটে একটা প্রবাসি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে আইনজীবীদেরও কাজ করা উচিত।
এর আগে অতিথিবৃন্দ আইনজীবী সমিতির আভ্যন্তরীণ বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার এবং আইনজীবীবৃন্দের সন্তানদের মধ্যে এককালীন বৃত্তি বিতরণ করেন।
আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. সামছুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি বলেছেন, ‘বিশ্বব্যাপিই অর্থনীতিতে একটা সংকট বিরাজ করছে। এটা আমাদের দেশেও আছে এটা অস্বীকার করছি না। তবে আমাদের দেশের আকাশে যে কালো মেঘ সেটি এখন সরতে শুরু করেছে। আশা করছি আগামী মাসে তা সরে যাবে। দেশে যে মূল্যস্ফীতি বেড়েছিলো। তা এখন অনেকটা কমে এসেছে। আগামী মাসে মূল্যস্ফীতি আরও কমবে অর্থনীতির একজন ছাত্র হিসেবে এটা আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি।’
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ‘আগামীতে তা পুরোপুরি কমে যাবে। এটা এ সরকারের ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিরলস কাজের কারণেই সম্ভব হয়েছে। এসরকার কাজের সরকার। জননেত্রী শেখ হাসিনা সবসময় মানুষের কল্যাণের কথা ভাবেন। মানুষের কল্যাণে নিষ্ঠার সাথে সাথে আমরা কাজ করছি।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মশিউর রহমান চৌধুরী বলেন, একটি পাখির যেমন দুটি ডানা থাকে তেমনি বিচার বিভাগের দুটি ডানা হচ্ছে বিচারক ও আইনজীবী। সুশাসন ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে আমাদের এক যোগে কাজ করতে হবে। যে দেশ যত উন্নত সে দেশের বিচারব্যবস্থা দিয়ে বিবেচনা করা হয়। তাই ন্যায় বিচার নিশ্চিতে বিচারক ও আইনজীবীদের নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মশিউর রহমান চৌধুরী, মহানগর দায়রা জজ একিউএম নাছির উদিদন, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য রুহুল আনাম চৌধুরী মিন্টু, সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন, সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জিপি অ্যাডভোকেট মো. রাজ উদ্দিন, সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নওশাদ আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।
আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট রবিউল লেইস রুকেস, মৌলভীবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এএসএম আজাদুর রহমান, হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালেহ উদ্দিন আহমদ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মাহফুজুর রহমান। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সমিতির যুগ্ম সম্পাদক বিজিত লাল দেব, যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাবানা ইসলাম, সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তুহেল মিয়া ও সহ সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হোসেন আহমদ।