সিলেটে ক্রিয়াশীল জাতীয় ও স্থানীয় সাংস্কৃতিক ফেডারেশনগুলো সিলেটে বাঙালি সংস্কৃতি চর্চার বহমান গৌরবোজ্জ্বল ধারাকে আরো বেগবান করা আহ্বান জানিয়েছে।
একইসাথে ফেডারেশনগুলো প্রত্যেক সংস্কৃতি কর্মীর মেধা-মননের বিকাশ ও কর্মদক্ষতার উন্নয়নের পাশাপাশি নারী পুরুষের সমতা ও সমঅধিকার নিশ্চিতের ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক সংগঠক, অভিভাবক, অনুরাগী, পৃষ্ঠপোষক ও সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছে।
বুধবার (১২ এপ্রিল) রাতে শারদা স্মৃতি ভবন প্রাঙ্গণে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেট এর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে এই আহ্বান জানানো হয়।
জোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুল আলম সেলিমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্ত্তীর সঞ্চালনায় উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ এর মোকাদ্দেস বাবুল ও সুকান্ত গুপ্ত, বাংলাদেশ নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদের শ্রী হিমাংশু বিশ্বাস ও সুকোমল সেন, বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের জামাল উদ্দিন হাসান বান্না, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের জগদ্বীপ দাস, বাংলাদেশ জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী সংস্থার রানা কুমার সিনহা, বাংলাদেশ জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদের প্রতিক এন্দ টনি, বাংলাদেশ নৃত্য শিল্পী সংস্থার নীলাঞ্জনা দাস জুঁই, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের অংশুমান দত্ত অঞ্জন ও খোকন ফকির, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার ফেডারেশনের সৈয়দ সাইমুম আনজুম ইভান, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের রজত কান্তি গুপ্ত ও মোস্তাক আহমদ, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের ধ্রুব জ্যোতি দে।
যৌথসভায় সিলেটের সংস্কৃতি অঙ্গনকেন্দ্রীক সাম্প্রতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে গৃহীত সিদ্ধান্তে বলা হয়- বাঙালি সংস্কৃতির চর্চা ও বিকাশে অগণিত সুফি-সাধক ও আউল-বাউলের অমর সৃষ্টিতে ধন্য এই পুণ্যভূমির অবদান দেশে-বিদেশে দীপ্যমান। এই সাফল্য ধারা বহমান। কিন্তু তা যেমনি কোনো ব্যক্তিনির্ভর নয় তেমনি ব্যক্তি বিশেষের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে ম্লান হতে পারে না।
এতে বলা হয়, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠে এসেছে তা শুধু সিলেটের নয়- গোটা দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের প্রত্যেকটি প্রাণকে আহত করেছে – ক্ষুব্ধ করেছে। একইভাবে আহত করেছে সমাজের অন্য সবাইকেও। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেগে ওঠা ক্ষোভ ও প্রতিবাদ খুবই যৌক্তিক। তবে এই প্রতিবাদী কর্মসূচিকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে বাঙালি ও বাঙালি সংস্কৃতির চিরশত্রু এবং নব্য বাঙালি ও বাঙালি সংস্কৃতির নব্য দরদীদের মাথাচাড়া দেওয়ার অপচেষ্টা চালানোর আশংকাও রয়েছে। তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।’
সংস্কৃতি অঙ্গনকেন্দ্রীক সাম্প্রতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় করে বলা হয়, ‘নতুন বছর সমাগত। পুরনো দিনের সকল জরা-জীর্ণতাকে বিসর্জন দিয়ে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোক্ত করতে প্রস্তুত প্রতিটি বাঙালি। এই শুভক্ষণে সুরমাপারের সংস্কৃতি অঙ্গনের সকল সম্মানিত সংগঠক, অভিভাবক, অনুরাগী, পৃষ্ঠপোষক ও সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান আসুন, যা কিছু অশুভ, অশোভন, অশালীন, অকথ্য, অকল্যাণকর- সব ঝেড়ে ফেলে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় নতুন করে শপথ নেই। একই সঙ্গে সিলেটের সাংস্কৃতিক অঙ্গন কলুষমুক্ত রেখে এই অঙ্গনের নিবেদিত প্রাণ প্রতিটি কর্মীর মেধা-মননের বিকাশ ও কর্ম দক্ষতার উন্নয়নের পাশাপাশি সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের অঙ্গীকার করি।’