সিলেট নগরের আখালিয়ার ধানুহাটারপাড়াস্থ এলাকায় ৪৫টি প্রবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর অভিযোগে শিবিরের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার (৬ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে। কোরআন শরীফ পুড়ানো হয়েছে এমন খবর জরুরী সেবা ‘৯৯৯’ থেকে পেয়ে কোতোয়ালি থানার একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে এ ২ জনকে গ্রেপ্তার করেন।
এদিকে কোরআন শরীফ পুড়ানো খবর পেয়ে উত্তেজিত জনতা শিবিরের ২ সদস্যকে মারধর করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একপর্যায়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে সিলেট আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ এর চেয়ারম্যান নুরুল রহমানকে (৫০) গ্রেপ্তার করেন। তিনি গোলাপগঞ্জের বসন্তপুর গ্রামের মৃত ফজুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে কোতোয়ালি থানাধীন তপুবন এলাকার সরু মিয়ার বাসায় থাকছেন।
এছাড়া ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানাধীন বাউলাপাড়া এলাকার ইদ্রিস আলীর ছেলে মাহবুব আলমকে (৪৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত মাহবুব বর্তমানে কোতোয়ালি থানাধীন ধানুহাটারপাড় এলাকায় থাকেন।
এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভ মিছিল করে পুলিশকে লক্ষ্য ইট-পাটকেল ছুড়ে। পরবর্তীতে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এসময় উত্তেজিত জনতার ইটের আঘাতে অসংখ্য পুলিশ সদস্য আহত হয় এবং পুলিশের গাড়ী ভাংচুর হয়। আহত পুলিশ সদস্যদেরকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত নুরুল রহমান ও মাহবুব আলম ছাত্র জীবনে শিবিরের সক্রীয় সদস্য ছিলো। নুরুল রহমান ছাত্র জীবনে ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়াতে ইসলাম শিক্ষা বিষয়ে পড়াশুনা করেছেন। তিনি বর্তমানে জৈন্তাপুর মাদ্রাসা সিলেটে ইসলাম শিক্ষার শিক্ষক ও পাশাপাশি সিলেট আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া নুরুল রহমানের কাছে রোববার (৬ আগস্ট) বিকেলে জালালাবাদ থানাধীন ফতেহপুর মাদ্রাসার শিক্ষক ইসহাক নামের এক ব্যক্তি কার্টুন ও বস্তা ভর্তি কোরআন শরীফ দিয়ে যান। কোরআন শরীফ দিয়ে কার্টুন রক্ষিত কোরআন শরীফ মানুষের মধ্যে বিলি করতে বলেন। একই সাথে বস্তায় রক্ষিত কোরআন শরীফ গুলো পুড়িয়ে ফেলতে বলেন।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ইসহাক সিলেট বেতারের ক্বারী ও সিলেট আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ এর খন্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কথামতো রোববার (৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে গ্রেপ্তারকৃত নুরুল রহমান সঙ্গীয় মাহবুবল আলমকে নিয়ে ৪৫টি কোরআন শরীফ পুড়ানোর সময় স্থানীয়রা দেখে ফেলেন। এ ঘটনার সাথে জড়িত ফতেহপুর মাদ্রাসার শিক্ষক ইসহাকসহ ঘটনায় অন্য আসামীদের গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী জানান, কোরআন শরীফ পুড়ানোর অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে ২জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সাথে পুলিশ পুড়ানো কোরআন শরীফ উদ্ধার করেছে। সেই সাথে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, পুলিশ অভিযান চালিয়ে কোরআন শরীফ পুড়ানোর ঘটনায় শিবিরের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় উত্তেজিত জনতার হামলায় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
সিলেট ভয়েস/এএইচএম