সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) বেকারত্ব দূরীকরণ ও উদ্যোক্তা তৈরিতে ‘টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে শিল্পোদ্যোগের প্রভাব’ শীর্ষক ক্ষুদ্র প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
আজ শুক্রবার (৩১ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের সম্মেলন কক্ষে রেজিস্ট্রেশনের মধ্য দিয়ে সেমিনারটি শুরু হয় । এতে প্রায় ১১০ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেন ।
অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, ইনোভেশন ডিজাইন এন্ড এন্ট্রাপ্রেনরশীপ একাডেমি (আইডিইএ), স্টুডেন্ট টু স্টার্টআপ, ওয়ান বাংলাদেশ।
এর আগে অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিনের সঞ্চালনায় ও ফিশ বায়োলজি ও জেনেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নির্মল চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে কুরআন ও গীতা পাঠের মাধ্যমে কর্মশালার কার্যক্রম শুরু হয়।
কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক এমএম মাহবুব আলম। এ সময় তিনি শিল্পোদ্যোগের উপর বিস্তারিত আলোকপাত করেন ।
প্রধান বক্তা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থসংস্থান ও ব্যাংকিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শাহ আলমগীর আলোকপাত করে বলেন , ‘উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে নতুন আইডিয়া ও ইচ্ছাশক্তি। খুব ভালো আইডিয়া থাকলে সহজে যে কোন নতুন বিজনেস শুরু করতে পারে । এজন্য প্রয়োজন নতুন আইডিয়ার সাথে দক্ষতা, ঝুঁকি নেওয়ার মানসিকতা ও সততা। নতুন জিনিস দেখলেই ইনভেস্ট করে উদ্যোক্তা হওয়া যাবে না । যেখানে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ আছে, কেবল সেই সকল সেক্টরে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে ।’
সিদ্ধার্থ গোস্বামী অনলাইনে যুক্ত থেকে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার বিভিন্ন কলা কৌশল ব্যক্ত করে । যাদের নতুন নতুন ধারণা আছে তাদের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, ইনোভেশন ডিজাইন এন্ড এন্ট্রাপ্রেনরশীপ একাডেমি (আইডিইএ) পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার ইনভেস্টমেন্ট সহায়তার কথা বলেন ।
এ সময় বক্তারা শিল্পোদ্যোগ নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরেন। একজন উদ্যোক্তা তার উদ্যোগের মাধ্যমে কিভাবে দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারেন বক্তব্যের প্রধান আলোচনায় তা উঠে আসে। ক্ষুদ্র এই প্রশিক্ষণ শেষে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদান করা হয়।
নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্ব আরোপ করে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা বলেন , যেকোনো কাজে সফলতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস ও সততা । সততার সহিত যেকোনো আইডিয়া নিয়ে নতুন আঙ্গিকে ব্যবসা পরিচালনা করলে সফলতা আসবেই ।
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ হওয়ায় কৃষি গ্রাজুয়েটদের বেশি সুযোগ সুবিধা রয়েছে শিল্প উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখা । আমাদের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে রকম আইডিয়া দিতে পারবে অন্য কেউ দিতে পারবে না । তারা সহজেই কৃষি সেক্টরে নতুন নতুন উদ্ভাবনী আবিষ্কার করে এগ্রি বিজনেস বা কৃষিভিত্তিক ইন্ডাস্ট্রি গড়তে পারে ।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই কর্তৃপক্ষকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এরকম একটা অনুষ্ঠান করার জন্য। আমরা চাইবো এরকম অনুষ্ঠান আরো বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত হোক যেন শিক্ষার্থীরা নিজেই থেকে উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ পায়।’
অন্যদিকে ফিশ বায়োলজি ও জেনেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান ও অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. নির্মল চন্দ্র রায় সবাইকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, ‘আমাদের উদ্ভাবনের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ জিনিসকে নতুন শিল্প উদ্যোগে রূপ দিতে হবে । আমাদের আশেপাশে অনেক জিনিস আছে যেগুলো ব্যবহার করে আমরা স্বাবলম্বী হতে পারি।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. এমএম মাহবুব আলম, কৃষি অর্থসংস্থান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শাহ আলমগীর, ওয়ান বাংলাদেশ সংগঠনের অতিথিবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি অনুষদের ছাত্র সমিতি সহ শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।