সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের বিচার করতে হবে : বাসদ

নড়াইলসহ সারাদেশে অব্যাহত সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস ও হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সিলেট জেলা উদ্যোগে সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেল ৫টায় আম্বরখানাস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সিলেট জেলা বাসদ সমন্বয়ক আবু জাফরের সভাপতিত্বে ও জেলা সদস্য প্রণব জ্যোতি পালের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন- নাজিকুল ইসলাম রানা, মনজুর আহমদ, শফিকুল ইসলাম কাজল, জাহেদ আহমদ, ইমরান আহমদ, আবদাল হোসেন প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৫ জুলাই নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দীঘুলিয়ায় এক যুবকের ফেসবুকে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে সাহাপাড়ায় সংখ্যালঘু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়ি-ঘর, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের এবং ইন্ধনদাতাদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

বক্তারা বলেন, সারাদেশে অব্যাহতভাবে বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, নির্যাতন, ভূমি দখলের ঘটনা ঘটে চললেও সরকার- প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা তো নেয়নি বরং তাদেরকে নানাভাবে আশ্রয় প্রশ্রয় ও পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। অনেক ক্ষেত্রে সরকার দলীয় লোকেরাই এসব সাম্প্রদায়িকতার সাথে যে যুক্ত তার প্রমাণ পাওয়া যায়। সংবাদ পত্রের খবরে প্রকাশ হয়েছে এবারের ঘটনায়ও আওয়ামীলীগ নেতারা ও পুলিশ ঘটনার সময় সেখানে থাকলেও তারা থামানোর চেষ্টা করেনি বরং উস্কানি দিয়েছে। যার ফলেই একের পর এক হামলা নির্যাতনের ঘটনা ঘটাতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এতো সাহস দেখাচ্ছে।

বক্তারা, বর্তমান সরকারী দল মনে করে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা দেশে থাকলে ভোট ব্যাংক আর দেশ ছেড়ে গেলে তাদের জমি সম্পত্তি তাদের দেখলে যাবে। স্বাধীনতার পর থেকেই সকল সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে দেশ পরিচালনা করে আসছে। যে কারণে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সাম্প্রদায়িকতা, জাত-পাত, ধর্মীয় বিভেদ-বিভাজন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দুর্বল করে, রাষ্ট্র ও সরকারের ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনকেই শক্তি যোগায় এবং শোষিত-শ্রমজীবী, মেহনতি মানুষের ঐক্য নষ্ট করে, দুর্ভোগ বাড়িয়ে দেয়।

বক্তারা সকল ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। একই সাথে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সন্ত্রাস এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সকল বাম প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।